Consumer Court

কম টাকা পেয়ে এলআইসি-র বিরুদ্ধে আদালতে, মিলল সুদ-সহ পুরোটাই

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২০ ০১:১৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

বছরে ১২ হাজার ২০ টাকার ‘প্রিমিয়াম’ দিয়ে জীবন বিমার একটি পলিসি করেছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা বিমলকুমার দাস। ১২ বছর পরে ওই পলিসি ‘ম্যাচিওর’ হয়ে তাঁর পাওয়ার কথা ছিল আড়াই লক্ষ টাকা। কিন্তু ভারতীয় জীবন বিমা নিগমের (এলআইসি) তরফে তাঁকে ৬৮,৮১০ টাকার রসিদ পাঠানোয় চমকে যান তিনি। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, বারো বছরে যে পরিমাণ টাকা বিমলবাবু জীবনবিমা নিগমকে দিয়েছেন, তার অর্ধেক টাকাও পাচ্ছেন না তিনি।

Advertisement

বছর চারেক আগে ওই ঘটনায় বিমলবাবু এলআইসির ঝাড়গ্রাম শাখার ম্যানেজার-সহ একাধিক আধিকারিককে বারবার জানিয়েও লাভ হয়নি। অবশেষে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ক্রেতা সুরক্ষা কোর্টে মামলা করেন। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে হেরে গেলেও হাল ছাড়েননি তিনি। প্রাপ্য টাকা ফেরাতে ফের রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেন। সম্প্রতি সেই আদালত ভুক্তভোগীর আবেদন মেনে নিয়ে এলআইসি-কে সুদ-সহ আড়াই লক্ষ টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছে।

পেশায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা বিমলকুমার দাস ২০০৪ সালের ২৮ মার্চ জীবনবিমার একটি পলিসি করান। বিমলবাবুর আইনজীবী সুকান্ত দাসের অভিযোগ, ‘‘বছরে ১২ হাজার কুড়ি টাকা করে আমার মক্কেল জীবনবিমা নিগমে জমা করেছিলেন। চুক্তি অনুযায়ী ১২ বছর পরে আড়াই লক্ষ টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও, ২০১৫ সালের ২৮ মার্চ জীবনবিমার তরফে তাঁকে ৬৮,৮১০ টাকার একটি রসিদ পাঠানো হয়।’’ অভিযোগ, এত কম টাকা কেন তা জানতে চেয়ে এলআইসি-র বিভিন্ন অফিসে বারবার দরবার করেও লাভ হয়নি। এর পরেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেন বিমলবাবু। কিন্তু কোর্ট সেই আবেদন বাতিল করে দিলে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেন তিনি।

Advertisement

রাজ্য সুরক্ষা আদালতে জীবনবিমার তরফে জানানো হয়, বিমলবাবুর সঙ্গে চুক্তির সময়ে পলিসির তথ্যে আড়াই লক্ষ টাকা ভুলবশত ছাপা হয়েছিল। কিন্তু জীবনবিমার এই দাবি মানতে চায়নি আদালত। দুই বিচারক শ্যামল গুপ্ত এবং উৎপলকুমার ভট্টাচার্য গত ৭ নভেম্বর তাঁদের রায়ে বলেন, ‘‘পলিসি চলাকালীন ভুল তথ্যের বিষয়ে ক্রেতাকে জানানো হয়নি। বিমা করানোর আগে সম্পূর্ণ তথ্য দিয়ে গ্রাহকের থেকে অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন। গ্রাহক অনুমতিপত্রে স্বাক্ষর করার সময়ে যেন কোনও বিষয় সম্পর্কে অন্ধকারে না থাকেন। সংস্থারই উচিত বিষয়টি নিশ্চিত করা। এ ক্ষেত্রে জীবনবিমা যে অনৈতিক কাজ করেছে, তা স্পষ্ট।’’

রায় বেরোনোর ৪০ দিনের মধ্যে এলআইসি কর্তৃপক্ষকে আড়াই লক্ষ টাকা দিতে নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট। ওই রায় প্রসঙ্গে এলআইসি-র আইনজীবী গোপাল বসু বলেন, ‘‘রাজ্য আদালত একতরফা রায় দিয়েছে। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করব।’’

আর বিমলবাবু বলছেন, ‘‘এর জন্য যত দূর যেতে হয় যাব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement