muder

গাড়িতে রক্তের দাগ দেখে সন্দেহ, স্ত্রীকে খুনে ধৃত যুবক

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জীবনতলা থানার পুলিশ বাসন্তী হাইওয়েতে নাকা তল্লাশি করছিল। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৮:১৮
Share:

হামা কামার এবং শাহরুখ আহমেদ।

স্ত্রীকে খুন করে বাসন্তী হাইওয়ের একটি নির্জন জায়গায় দেহটি ফেলে দিয়েছিল স্বামী। তার পরে পরিকল্পনামাফিক গাড়ি নিয়ে পালিয়েও যাচ্ছিল সে। তবে বাদ সাধল পুলিশের নাকা তল্লাশি। পুলিশ জানিয়েছে, স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ ধৃত ওই যুবকের নাম শাহরুখ আহমেদ। তার স্ত্রীর নাম হামা কামার।

Advertisement


পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জীবনতলা থানার পুলিশ বাসন্তী হাইওয়েতে নাকা তল্লাশি করছিল।
সরবেড়িয়ার কাছে একটি গাড়িতে তল্লাশির সময়ে সিটের তলায় রক্তের দাগ চোখে পড়ে পুলিশকর্মীদের। কী ভাবে গাড়িতে রক্ত এল, তা চালকের কাছে জানতে চাওয়া হলে সে রাস্তার গার্ড রেলে ধাক্কা মেরে পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ ওই গাড়ির পিছু নেয়। চালক গাড়িটিকে নিয়ে কিছুটা এগিয়ে রাস্তা সংলগ্ন একটি নয়ানজুলির ধারে ফেলে পালায়। রাতের


অন্ধকারে অনেক খোঁজাখুঁজি করে পুলিশ ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়ে‌ছে, প্রথমে ধৃত কিছু বলতে না চাইলেও পরে পুলিশের জেরার মুখে সে ভেঙে পড়ে। সে জানায়, তার নাম শাহরুখ আহমেদ। স্ত্রীকে খুন করে বাসন্তী হাইওয়েতে ফেলে পালাচ্ছিল সে। পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতের বাড়ি নারকেলডাঙায়। পুলিশের জেরায় সে স্বীকার করেছে, বৃহস্পতিবার সে হামাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে।

Advertisement


পুলিশ সূত্রের খবর, শাহরুখকে জেরা করতে করতে সকাল হয়ে যায়। এ দিকে, শুক্রবার সকালে প্রগতি ময়দান থানা এলাকার বানতলার কাছে রাস্তার ধারে এক অজ্ঞাতপরিচয় মহিলার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়ায়। মহিলার মাথা থেঁতলানো ছিল। ওই দেহ উদ্ধারের কথা জানতে পারে জীবনতলা থানার পুলিশও। পুলিশের দাবি, ওই মহিলার দেহের ছবি দেখাতে ধৃত স্বীকার করে সেটিই তার স্ত্রী হামার দেহ।


পুলিশ সূত্রের খবর, শাহরুখ জানিয়েছে, কলকাতার রামমোহন সরণির বাসিন্দা হামা কামারের সঙ্গে তার বিয়ে হলেও দু’জনের বনিবনা হচ্ছিল না। ছ’বছরের এক সন্তানও রয়েছে তাদের। পুলিশকে শাহরুখ জানিয়েছে, হামার বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে বলে সে সন্দেহ করত। এই নিয়ে তার সঙ্গে হামার মাঝেমধ্যেই ঝামেলা হত। তাই হামা বেশ কিছু দিন ধরে যাদবপুরের বিক্রমগড় এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকছিলেন। একটি বারে নর্তকীর কাজও করছিলেন তিনি। শাহরুখ পুলিশকে জানিয়েছে, বারে কাজ করাও অপছন্দ করত সে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হামাকে শাহরুখ নারকেলডাঙার বাড়িতে নিয়ে আসে। তখন হামার বেশ কয়েকটি ফোন এসেছিল।

এই ফোন আসাকে কেন্দ্র করে ফের দু’জনের বচসা বাধে। বচসার মধ্যে রাগের মাথায় শাহরুখ হামাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে নারকেলডাঙার খালপাড়ে স্ত্রীর দেহ নিয়ে গিয়ে ইট দিয়ে মাথা থেতলে দেয় সে। তার পরে একটি গাড়িতে দেহটি নিয়ে বাসন্তী হাইওয়ের দিকে রওনা দেয়। বানতলার কাছে একটি খালের ধারে নির্জন জায়গায় দেহটি ফেলে সে যখন পালাচ্ছিল, তখনই পুলিশ তল্লাশির জন্য তার গাড়ি আটকায়। বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার কামনাশিস সেন বলেন, ‘‘খুনের ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নাকা তল্লাশির সময়ে গাড়ি-সহ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এটি জেলা পুলিশের বড় সাফল্য।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement