দমদম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায়। —ফাইল চিত্র।
প্রচার সেরে ফিরছিলেন দমদম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায়। আচমকাই রাস্তায় সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির জটে আটকালেন তিনি। অবরোধ চলছে। খর রোদে কী কারণে বিক্ষোভ, তা দেখতে যেতেই তিন বারের সাংসদকে শুনতে হল, ‘‘জল চাই, জল দিন!’’
গরমের সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পানিহাটির জলসঙ্কট। রোজই বিভিন্ন এলাকা থেকে পানীয় জল না পাওয়ার ক্ষোভ উঠে আসছে। দিনকয়েক আগেও রাস্তা অবরোধ করেন বাসিন্দারা। সোমবার সোদপুর-মধ্যমগ্রাম রোড অবরোধ করেন স্থানীয়েরা। পানিহাটি পুরসভার ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে ঘোলার কদমতলা মোড়ে এ দিন এই অবরোধে আটকে পড়েন সৌগত। সেখানে নেমে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তাঁকে ঘিরে ধরে একদল বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলে খবর। যদিও সৌগতের দাবি, ‘‘আমাকে ঘিরে কেউ বিক্ষোভ দেখাননি। ওঁরা নিজেদের কথা জানিয়েছেন। কয়েক দিন ধরে এলাকায় জল নেই, তাই বাসিন্দারা অবরোধ করেন। পুরসভাকে জানিয়েছি, ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’’
কিন্তু বাসিন্দাদের প্রশ্ন, তীব্র গরমে আর কত দিন এই জলসঙ্কট চলবে? স্নান বা বাসন ধোয়ার জল তো দূর, পানীয় জলটুকুও মিলছে না ঠিক মতো। জল কিনে খেতে হচ্ছে। এ দিন যাঁরা অবরোধ করেছিলেন, তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই জলের গতি খুব ক্ষীণ। কিন্তু গত ছ’দিন ধরে কার্যত জল আসছেই না। পুর কর্তৃপক্ষকে বার বার জানিয়েও কোনও রকম সুরাহা হয়নি। অগত্যা এ দিন তাঁরা রাস্তা অবরোধের সিদ্ধান্ত নেন।
মধ্যমগ্রাম-সোদপুর রোডের মতো ব্যস্ত রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ায় প্রবল ভোগান্তি হয় যাত্রীদের। তীব্র রোদের মধ্যে আসা-যাওয়ার রাস্তায় সার দিয়ে যানবাহন দাঁড়িয়ে যায়। সৌগত এ দিন নিজের গাড়ি থেকে নেমে অবরোধকারীদের কাছে যেতেই তাঁকে ঘিরে ধরেন তাঁরা। মহিলারা চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘‘ছ’দিন ধরে জল নেই। এই গরমে বাঁচব কী করে? কাউকে জানিয়েই কিছু হচ্ছে না। আপনি কিছু করুন।’’ আবার এক দল দাবি করেন, জল আসার আগে পর্যন্ত অবরোধ চালিয়ে যাবেন তাঁরা।
এই পরিস্থিতিতে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েই পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (জল সরবরাহ) তীর্থঙ্কর ঘোষকে ফোন করেন সৌগত। এর পরে তিনি কেএমডিএ-র আধিকারিকদেরও ফোন করেন। ঘটনাস্থলে আসেন স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি। সৌগত ও পুরসভার তরফে জল সরবরাহের আশ্বাস পেয়ে দীর্ঘক্ষণ পরে অবরোধ তুলে নেন বাসিন্দারা। কিন্তু তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘জলের জন্য আবার রাস্তায় নামতে হবে না তো?’’