—প্রতীকী ছবি।
ঘড়িতে তখন রাত ৮টা। কাজ সেরে একাই ফিরছিলেন তরুণী। মোবাইল হাতে হাঁটার সময়ে আচমকাই সেখানে মোটরবাইক নিয়ে হাজির হয় এক যুবক। বাইকের গতি কমিয়ে তরুণীর মোবাইল ছিনিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে দুষ্কৃতীর গেঞ্জি ধরে ফেলেন তিনি। ওই অবস্থায় তাঁকে রাস্তায় টানতে টানতে বেশ কিছুটা নিয়ে যাওয়ার পরে হাত ছাড়িয়ে চম্পট দেয় ওই ছিনতাইকারী!
দিন সাতেক আগে খাস কলকাতার এই ঘটনা মনে করাচ্ছে মাসকয়েক আগে দিল্লির রাস্তায় এক তরুণীকে গাড়িতে টেনে নিয়ে গিয়ে পিষে দেওয়ার ঘটনা। বালিগঞ্জ থানা এলাকার এই ঘটনায় দিন ছয়েক পরে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্তও কেউ গ্রেফতার হয়নি। এমনকি, সিসি ক্যামেরার নজরদারিতে মোড়া শহরে অভিযুক্তকে শনাক্ত করতেও পুলিশকে বেগ পেতে হচ্ছে বলে খবর। বুধবার ওই তরুণীকে লালবাজারে ডাকা হয়। অভিযুক্তের চেহারা সম্পর্কে ধারণা পেতে তাঁর সঙ্গে কথা বলা হয়। তাঁর বিবরণ অনুযায়ী অভিযুক্তের স্কেচও আঁকানো হয়েছে। যদিও অভিযুক্তের নাগাল মেলেনি। শহর কলকাতায় এমন ঘটনা ঘটায় নিরাপত্তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠেছে, তেমনই এত দিন পরেও অভিযুক্ত গ্রেফতার না হওয়ায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে পুলিশের ভূমিকাও।
গার্ডেনরিচের বাসিন্দা, বছর তেইশের রুবিনা বিবি ভবানীপুরের একটি বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন। প্রায়ই কাজের শেষে তিনি সেখানে থেকে যেতেন। মাঝেমধ্যে ফিরতেন গার্ডেনরিচের শ্বশুরবাড়িতে। গত ১৬ জুন রাতে গার্ডেনরিচে ফিরছিলেন তিনি। অভিযোগ, ল্যান্সডাউন রোড ধরে একা ফেরার সময়ে বাইকে আসা এক যুবক রুবিনার সামনে দাঁড়ায় এবং হাতের মোবাইল ছিনিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। চিৎকার করার পাশাপাশি কোনও মতে ওই যুবকের গেঞ্জি ধরে ফেলেন রুবিনা। কিন্তু সেই অবস্থাতেই ওই দুষ্কৃতী জোরে বাইক চালিয়ে রুবিনাকে রাস্তায় টানতে টানতে কিছু দূর নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। রুবিনার কথায়, ‘‘কিছু না ভেবেই মোবাইল চোরকে ধরতে ওর গেঞ্জিটা ধরেছিলাম। কিন্তু ওই অবস্থাতেই বাইক চালিয়ে আমাকে টেনে নিয়ে যেতে থাকে। কিছুটা যাওয়ার পরে আমি পড়ে যাই। এর পরে আর কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলাম না।’’
পরে স্থানীয়েরা এসে উদ্ধার করেন জখম রুবিনাকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন রুবিনার স্বামী এবং যে বাড়িতে তরুণী কাজ করেন, সেখানকার লোকজনও। সেই রাতেই বালিগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন রুবিনা। চিকিৎসকের কাছেও যান তিনি। রুবিনার অভিযোগ, ওই ভাবে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ায় তাঁর হাত-পা-সহ শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাত লেগেছে। এখনও স্বাভাবিক ভাবে হাঁটতে পারছেন না তিনি।
রুবিনার দাবি, ঘটনাস্থলের কাছাকাছি একাধিক সিসি ক্যামেরা আছে। ফুটেজ দেখলে অভিযুক্তের খোঁজ মিলতে পারে বলে তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন। এক পুলিশকর্তা যদিও বলেন,‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজও সংগ্রহ করা হয়েছে। অভিযোগকারীরসঙ্গে কথা বলে পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’