আগুনে ভস্মীভূত বহু দোকান। বুধবার, কালিকাপুর পূর্বাচল বাজারে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
গভীর রাতের আগুনে পুড়ে গেল গরফা থানা এলাকার কালিকাপুরের পূর্বাচল বাজারের ৫০টিরও বেশি দোকান। মঙ্গলবার রাতে ওই বাজার থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখে স্থানীয়েরা দমকলে খবর দেন। পাশাপাশি, আগুন নেভানোর কাজেও হাত লাগান তাঁরা। যদিও দমকল পৌঁছনোর আগেই আগুন বাজারে ছড়িয়ে পড়ে। তবে হতাহতের কোনও খবর নেই।
মঙ্গলবার রাত আড়াইটে নাগাদ আগুন লাগে কালিকাপুরের পূর্বাচল বাজারে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে দমকলের চারটি ইঞ্জিন। আসে গরফা থানার বিশাল পুলিশবাহিনীও। তবে তার আগেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। দমকলকর্মীদের প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘বাজারের অধিকাংশ দোকানে প্লাস্টিকের ছাউনি থাকায় মুহূর্তে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।’’ ৫০টিরও বেশি দোকান ভস্মীভূত হয়েছে বলে ব্যবসায়ীদের দাবি।
ঘন বসতিপূর্ণ এলাকায় থাকা ওই বাজারে আগুন লাগায় আতঙ্ক ছড়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে। আগুন দেখে দ্রুত আশপাশের আবাসনের বাসিন্দারা রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে বাইরে এসে দেখি, আকাশ কালো ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে। সামনের বাজারটা দাউ দাউ করে জ্বলছে। আতঙ্কে এক কাপড়ে সকলকে নিয়ে রাস্তায় নেমে আসি।’’
কালিকাপুরের ওই বাজারে ৩০০টিরও বেশি দোকান রয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ৫০টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝলসে গিয়েছে দোকানে রাখা মুরগি। পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে দোকানে রাখা অন্য জিনিসপত্রও। রাতারাতি কার্যত পথে বসেছেন বাজারের ব্যবসায়ীদের একাংশ। স্থানীয় ব্যবসায়ী রাজু দাস বলেন, ‘‘এই মাছের ব্যবসার উপরেই সংসার চলত। এ বার কী করব জানি না।’’ কালিকাপুর বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোপাল রায় বলেন, ‘‘পুরসভাকে জানিয়েছি। তারা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা জমা দিতে বলেছে। সেই মতো তালিকা হচ্ছে।’’
তবে, কী ভাবে বাজারে আগুন লাগল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ এবং দমকল। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। এখানে প্রচুর বিদ্যুতের তার রয়েছে। সেখান থেকে কোনও ভাবে আগুন লাগল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ফরেন্সিক পরীক্ষার পরেই নির্দিষ্ট করে বলা যাবে।’’