কলকাতার এমএলএ হস্টেল। —ফাইল চিত্র।
কলকাতার এমএলএ হস্টেলে এক বিধায়কের দেহরক্ষীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। শনিবার সকালে হস্টেলে এক তলা থেকে উদ্ধার হয় দেহ। জানা গিয়েছে, বান্দোয়ানের তৃণমূল রাজীবলোচন সোরেনের দেহরক্ষীর দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কী ভাবে তাঁর মৃত্যু হল, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
শনিবার সকালে হস্টেলের নিরাপত্তারক্ষীরা প্রথম দেহ পড়ে থাকতে দেখতে পান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পার্ক স্ট্রিট থানার পুলিশ। রয়েছেন লালবাজারের হোমিসাইড শাখার আধিকারিকেরা। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, হস্টেলের চার তলা থেকে পড়ে গিয়েই মৃত্যু হয়েছে ওই দেহরক্ষীর।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত ব্যক্তির নাম জয়দেব ঘড়াই। আত্মহত্যা, না কি দেহরক্ষীর মৃত্যুর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, সেটা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। শুধু তা-ই নয়, সকলের নজর এড়িয়ে জয়দেব কী ভাবে পড়ে গেলেন বা ঝাঁপ দিলেন, তা-ও পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
ঘটনাস্থলে এসেছিলেন কলকাতা পুলিশের ডিসি (সাউথ) প্রিয়ব্রত রায়। এই ম়ৃত্যু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে উপর থেকে পড়েই মৃত্যু হয়েছে।’’
এমএলএ হস্টেলের মতো জায়গায় এমন ঘটনা ঘটায় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সাধারণত এই হস্টেলে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকে। লালবাজার সূত্রে খবর, শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত কারা কারা হস্টেলে এসেছেন, তার তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সেই তালিকা ধরে সকলের সঙ্গে আলাদা আলাদা ভাবে কথা বলা হবে। পাশাপাশি, মৃতের পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে। তিনি কোনও মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন কি না, তা-ও পুলিশ জানার চেষ্টা করছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ তদন্ত করছে। রিপোর্ট এলে জানা যাবে। আমি ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেছি। সব কাগজপত্রও খতিয়ে দেখেছি।’’
উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালে এই এমএলএ হস্টেলে খুন হয়েছিলেন উত্তর দিনাজপুরের ফরওয়ার্ড ব্লকের গোয়ালপোখরের তৎকালীন বিধায়ক রমজান আলি। সেই সময় ওই খুনের ঘটনাকে কেন্দ্রকে উত্তাল হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। ২০২০ সালে হেমতাবাদের তৎকালীন বিজেপির বিধায়ক দেবেন রায়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল।