গঙ্গাপাড়ের ভাঙন নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতেও মামলা দায়ের হল। ফাইল ছবি।
ফরাক্কা বাঁধ সংলগ্ন এলাকায় গঙ্গার ভাঙন নিয়ে সমীক্ষার জন্য গত নভেম্বরে কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন ভাঙন নিয়ে। এমনিতে গঙ্গাপাড়ের ভাঙন নিয়ে নিয়মিত চর্চা চলছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে। কারণ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, গঙ্গার ভাঙন ক্রমশ জটিল আকার ধারণ করছে।
এ বার সেই গঙ্গাপাড়ের ভাঙন নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতেও মামলা দায়ের হল। পলি জমা-সহ একাধিক কারণে গঙ্গার নাব্যতা যেমন হ্রাস পাচ্ছে, তেমনই কয়েকটি জায়গায় ভাঙন গুরুতর আকার নিয়েছে। এমনটাই জানানো হয়েছে ওই মামলার আবেদনে।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় জলসম্পদ, নদী উন্নয়ন ও গঙ্গা পুনরুজ্জীবন মন্ত্রক সূত্রের খবর, নদী-তীরের ব্যবস্থাপনা, গঙ্গার ঘাট ও শ্মশানঘাটের উন্নয়ন, নদীর ধারে গাছ লাগানো-সহ একাধিক প্রকল্পের কারণে ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্পের অধীনে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। ২০১৪-’১৫ সাল থেকে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ওই প্রকল্পের অধীনে কেন্দ্র মোট ১৩,১০৮.৭২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। সেই বরাদ্দকৃত অর্থেরমধ্যে ‘ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিনগঙ্গা’ (এনএমসিজি) রাজ্য সরকার-সহ গঙ্গাপাড়ের রক্ষণাবেক্ষণেনিয়োজিত সংস্থার জন্য ১২,৩৭৭.২৩ কোটি টাকা ছেড়েও দিয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ পেয়েছে ১২৩২.৮৭ কোটি টাকা।
যদিও সেই টাকা পর্যাপ্ত নয় বলেই মনে করছেন অনেকে। কারণ, এ রাজ্যে গঙ্গাপাড়ের ভাঙন বহু জায়গায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পরিবেশকর্মীরা। এমনকি, গঙ্গাপাড়ের ভাঙনের জেরে হাওড়ার বটানিক্যাল গার্ডেনের বড়সড় ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে জানাচ্ছেন এই সংক্রান্ত বিষয়ে পরিবেশ আদালতে মামলাকারী সুভাষ দত্ত। তিনি জানিয়েছেন, ২৭৩ একর বিস্তৃত ওই উদ্যানের পূর্ব দিক অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। পাড়ের ভাঙন ও মাটি-ক্ষয়ের কারণে সেই এলাকায় গুরুতর ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যে একাধিক গাছ মাটি-ক্ষয়ের কারণে উপড়ে গিয়েছে এবং আরও অনেক গাছ উপড়ে আসার আগের মুহূর্তে দাঁড়িয়ে। সুভাষ দত্তের কথায়, ‘‘এই মুহূর্তে পদক্ষেপ করা না হলে বটানিক্যাল গার্ডেনের বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।’’