তৃষা দত্ত
দুই সঙ্গীর সঙ্গে লেনিন সরণির ১২২ নম্বর বহুতলের দরজার সামনের ফুটপাতে ঘুমোচ্ছিল আট বছরের বালিকা। অভিযোগ, ওই বহুতল থেকে বেরোনো একটি গাড়ির চালক প্রবেশপথ দিয়ে বেরিয়েই পিষে দিল তাকে। দ্রুত ওই বালিকাকে এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো যায়নি। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ। মৃতা বালিকার নাম তৃষা দত্ত। চালক-সহ গাড়িটি পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারাই। তালতলা থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছে চালককে।
ফুটপাতের বাসিন্দা ওই শিশুর মৃত্যুতে স্বভাবতই ভেঙে পড়েছেন তার মা জিতু দত্ত। মেয়ের শেষকৃত্য সেরে ফেরা মায়ের একটাই প্রশ্ন, ‘‘যে গেট দিয়ে গাড়ি বেরোয়, মেয়েটা তো শুয়েছিল তার এক ধারে। তবু চালক কী ভাবে মেয়ের উপর দিয়ে গাড়িটা নিয়ে চলে গেলেন?’’ সূত্রের খবর, ওই বহুতলে রয়েছে একাধিক অফিস। গাড়িটি কোনও একটি অফিসের বলে দাবি স্থানীয়দের। সেখানে ঢোকা এবং বেরোনোর পৃথক দরজা রয়েছে। কিন্তু ঘটনার সময়ে ঢোকার দরজা বন্ধ ছিল। ফলে একটি দরজা দিয়েই গাড়ি ঢোকা ও বেরোনো চলছিল।
ওই ফুটপাতেরই বাসিন্দা করণ সর্দার জানান, তৃষা স্থানীয় স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত। শনিবার স্কুল ছুটি ছিল। নিজে পড়াশোনা করে বন্ধুদের সঙ্গে খেলে রাত আটটা নাগাদ শুয়ে পড়েছিল। ওর পাশে আরও দু’জন শুয়েছিল। ওরা ফুটপাতের যেখানে শুয়েছিল, তার কাছে ওই বহুতলে ঢোকার একটি গেট আছে। সেটি বন্ধ ছিল। তার পাশের গেটটি খোলা ছিল। ওই পাশের গেট দিয়েই গাড়িটা বেরোয়। করণ বলেন, ‘‘গাড়িটা বেরোনোর সময়েই গতি যথেষ্ট বেশি ছিল। তাতেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাচ্চাটাকে পিষে দিল।’’
দুর্ঘটনার পরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ফুটপাতের বাসিন্দাদের মধ্যে। তাঁরা জানান, তৃষার বাবা নেই। ওর মা রান্নার কাজ করেন। এক ভাই রয়েছে তৃষার। পড়াশোনায় মনোযোগী বালিকা ফুটপাতে বসে রাস্তার আলোতেও পড়াশোনা করত।