প্রতীকী ছবি।
বাসের মধ্যে বসেছিল মদের আসর। সেখানেই এক কন্ডাক্টরকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল একই রুটের আর এক কন্ডাক্টরের বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাতে, কসবার রাসবিহারী কানেক্টরের ঘটনা। পুলিশ সূত্রের খবর, মৃতের নাম উজ্জ্বল হালদার (২৮)। বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার মন্দিরবাজার এলাকায়। রাতে পুলিশ গ্রেফতার করে শেখ রাজু নামে অভিযুক্তকে। তার বাড়ি বেলগাছিয়ায়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, বাস চালানোর যোগ্যতা নিয়ে টিপ্পনী করায় রাগে ছুরি চালিয়ে দিয়েছিল রাজু। ধৃতকে শনিবার আদালতে তোলা হলে আট দিনের পুলিশি হেফাজত হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, রাজু ও উজ্জ্বল ৩সি/১ রুটের দু’টি বাসে কন্ডাক্টরের কাজ করতেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, গত মঙ্গলবার একটি পথ দুর্ঘটনায় উল্টোডাঙা থানার পুলিশ আটক করে রাজুদের বাসটিকে। সেটি ওই থানা চত্বরে রাখা ছিল। শুক্রবার বাসটিকে ছাড়া হয়। ওই রুটের কিছু বাস রাতে কসবা কানেক্টরের গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামের কাছে রাখা থাকে। থানা থেকে ছাড়ার পরে সেখানেই এনে রাখা হয় বাসটিকে। আর রাতে তাতেইবসে মদের আসর। রাজু ছাড়াও সেখানে ছিলেন বাসটির চালক শেখ জুলফি। উজ্জ্বল ছাড়া অন্য কয়েক জন বাস কন্ডাক্টর ও চালক সেখানে আসেন।
পুলিশি সূত্রের খবর, খাওয়াদাওয়ার সময়ে উজ্জ্বল রাজুদের বাস চালানোর যোগ্যতা নিয়ে ঠাট্টা করতে শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘‘কী ভাবে তোরা বাস চালাস যে এত দুর্ঘটনা ঘটে? পুলিশের কাছে বার বার ধরা পড়তে হয়?’’ এই নিয়ে হাসিঠাট্টা চলাকালীন রাজু একটি ফল কাটার ছুরি বার করে উজ্জ্বলকে কোপাতে শুরু করে বলে অভিযোগ। কোনও মতে বাকিরা তাকে আটকান। তত ক্ষণে উজ্জ্বলের রক্তপাত হতে শুরু করে। অন্যেরা তাঁকে নিয়ে হাসপাতালের দিকে রওনা হন। কিন্তু রুবি মোড়ের কাছাকাছি পৌঁছলে তাঁর মৃত্যু হয় বলে পুলিশকে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। খবর পেয়ে কসবা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাজুকে গ্রেফতার করে ও ছুরিটি উদ্ধার করে। আটক করা হয় বাসটিও।
শনিবার ঘটনাস্থলে গেলে দেখা যায়, গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামের সামনে দাঁড়িয়ে আছে ওই রুটের অন্য বাস। সেই বাসের কর্মীরা কসবা থানার উল্টো দিকে রাখা বাসটি দেখিয়ে দেন। ভিতরে পড়ে ছিল মাদুর, খাবারের প্যাকেট ও পানীয়ের বোতল। এ দিন বাসটি পর্যবেক্ষণে যান লালবাজারের হোমিসাইড শাখা ও ফরেন্সিক বিভাগের সদস্যেরা। নমুনা সংগ্রহের পাশাপাশি কথা বলা হয় প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গেও। পুলিশ জানিয়েছে, বাসটির মালিক শহরের বাইরে পরিবার নিয়ে চিকিৎসা করাতে গিয়েছেন। তিনি ফিরলে তাঁর সঙ্গেও কথা বলা হবে। তবে বাসমালিক সংগঠনের তরফে প্রতিক্রিয়া মেলেনি।