স্বাস্থ্য ভবন। —ফাইল চিত্র।
প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে প্রাথমিক চিকিৎসা-পরিষেবার জন্য তাঁদের উপরেই নির্ভর করেন বাসিন্দারা। যদিও তাঁরা কোনও প্রথাগত চিকিৎসক নন। তবে যেহেতু গ্রামীণ জনস্বাস্থ্যের প্রাথমিক স্তরের চিকিৎসার অনেকটাই তাঁদের উপর নির্ভরশীল, তাই সেই গ্রামীণ স্বাস্থ্য সহায়কদের জন্য নির্দিষ্ট বই প্রকাশ করল স্বাস্থ্য দফতর।
সূত্রের খবর, ‘জনস্বাস্থ্য সহায়ক পুস্তিকা’ নামে ২৩৭ পাতার ওই বইয়ের প্রথমেই স্পষ্ট বলা রয়েছে, সেটি ডাক্তারি শেখার সহযোগী পাঠ্যক্রম নয়। কোন রোগে কী ওষুধ দেবেন, তার সহায়িকাও নয়। বরং গ্রামীণ স্বাস্থ্য সহায়কদের স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের ধারণা বাড়ানোর জন্য রাজ্য সরকার যে প্রশিক্ষণ কর্মসূচির ব্যবস্থা করেছে, বইটি তার দিক-নির্দেশক মাত্র। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘গ্রামীণ স্বাস্থ্য সহায়কেরা মূল প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার বাইরে থেকে মানুষের প্রয়োজন মেটান। অনেক সময়ে এঁরাই মানুষ ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মধ্যে মেলবন্ধনের কাজ করেন।’’ তিনি জানান, তাই ওই সমস্ত গ্রামীণ স্বাস্থ্য সহায়কদের কী কী করণীয় বা করণীয় নয়— তা শেখাতে পারলেই আখেরে সামগ্রিক চিকিৎসা ব্যবস্থার লাভ হবে বলে পর্যবেক্ষণ স্বাস্থ্য কর্তাদের। তাঁরা আরও মনে করেন, ওই স্বাস্থ্য সহায়কদের মাধ্যমেই রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি স্বাস্থ্য পরিকল্পনা সহজেই গ্রামের মানুষের দুয়ারে পৌঁছতে পারবে। ওই বইতে জ্বর, শ্বাসকষ্ট, সর্পদংশন, জ্ঞান হারানো, সুগার-সহ বিভিন্ন রোগের লক্ষণ এবং কী করণীয়, সেই সম্পর্কে বলা হয়েছে।
‘প্রোগ্রেসিভ রুরাল মেডিক্যাল প্র্যাক্টিশনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর রাজ্য সভাপতি মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট মডিউল ছাড়াই এত দিন প্রশিক্ষণ চলছিল। দীর্ঘ দিন এর জন্য স্বাস্থ্য দফতরে দরবার করেছি। অবশেষে একটি নির্দিষ্ট মডিউল তৈরি হল। এতে নিজেদের কর্তব্য সম্পর্কে ওঁরাও ওয়াকিবহল হবেন।’’ রাজ্য পল্লি চিকিৎসক সংগঠনের সভাপতি দিলীপকুমার পানের অবশ্য দাবি, ‘‘বইটি মন ভোলানো পদক্ষেপ। দীর্ঘ দিন ধরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দিয়ে আমাদের প্রশিক্ষণের দাবি জানাচ্ছি। কিন্তু তা না-করে নার্সদের দিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ানো হচ্ছে। আশা কর্মীরা ওষুধ বিলি করছেন। অথচ আমাদের অধিকার নেই।’’