—প্রতীকী চিত্র।
ফুটপাত থেকে চুরি হয়ে গিয়েছিল ন’মাসের এক শিশুকন্যা। পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে বিহারের জামুই থেকে ওই শিশুটিকে উদ্ধার করল পুলিশ। তাকে চুরির অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে মুচিপাড়া থানার পুলিশ। তদন্তকারীরা প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন, শিশুটিকে বিক্রির উদ্দেশ্যেই জামুইয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মুচিপাড়া থানা এলাকার সূর্য সেন স্ট্রিটে ফুটপাতবাসী মায়ের সঙ্গেই থাকে ন’মাসের ওই শিশুটি। গত রবিবার রাতে মেয়েকে নিয়ে ফুটপাতেই ঘুমোচ্ছিলেন তার মা। পরদিন ভোরে উঠে তিনি দেখেন, বিছানায় মেয়ে নেই। তাকে দেখতে না পেয়ে আশপাশে খোঁজ শুরু করেন মা। কিন্তু কোনও ভাবেই শিশুটির খোঁজ পাওয়া যায়নি। এর পরে সকালে মুচিপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন শিশুটির মা। তদন্তে নেমে ওই জায়গা এবং সংলগ্ন এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখেন মুচিপাড়া থানা ও লালবাজারের গোয়েন্দারা। সেই ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার দিন ভোর ৪টে নাগাদ এক ব্যক্তি ওই রাস্তা দিয়ে সন্দেহজনক ভাবে সাইকেল ভ্যান চালিয়ে যাচ্ছে। এর পরে শুরু হয় ওই ব্যক্তির খোঁজ।
তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, কলেজ স্ট্রিট মোড় এলাকার বাসিন্দা ওই ব্যক্তির নাম ইন্দ্রদেব দাস। তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই শিশু চুরির ঘটনায় যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করে নেয় ইন্দ্রদেব। পুলিশকে ওই ব্যক্তি জানায়, তার দু’জন সঙ্গী শিশুটিকে চুরি করার পরে বিক্রির উদ্দেশ্যে বিহারে নিয়ে গিয়েছে। ইন্দ্রদেবকে গ্রেফতার করার পরে দ্রুত বিহারে পৌঁছে যায় মুচিপাড়া থানার একটি দল। মঙ্গলবার রাতে জামুই থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। পাশাপাশি, গ্রেফতার করা হয় ননীকিশোর দাস নামে আরও এক অভিযুক্তকে। এই ঘটনায় তৃতীয় অভিযুক্ত পলাতক। সে ননীকিশোরের ছেলে সুরেশ দাস। তার খোঁজে তল্লাশি চলছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে, গোটা ঘটনাটি পূর্ব-পরিকল্পিত। ১১ হাজার টাকায় শিশুটিকে বিক্রি করার ছক কষেছিল অভিযুক্তেরা। সেই উদ্দেশ্যেই চুরির পরে শিশুটিকে বিহারে নিয়ে যায় তারা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রেনে করে শিশুটিকে বিহারে নিয়ে গিয়েছিল ননীকিশোর ও তার ছেলে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে, এই ঘটনার পিছনে বড়সড় কোনও শিশু চুরি-চক্রের হাত থাকতে পারে। অভিযুক্তেরা শিশুটিকে বিহারে নিয়ে যাওয়ার জন্য অগ্রিম বাবদ কোনও টাকা নিয়েছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘এই ঘটনার পিছনে বড় কোনও পাচার চক্র থাকতে পারে। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’