তনুশ রায়। —ফাইল চিত্র।
অক্টোবরে জন্মদিনের অনুষ্ঠান করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল পরিবার। কিন্তু যাকে ঘিরে সেই অনুষ্ঠান হওয়ার কথা, সে-ই আর রইল না। হঠাৎই স্কুলগাড়িতে অসুস্থ হয়ে শুক্রবার সকালে মারা গেল চার বছরের সেই পড়ুয়া। মৃতের নাম তনুশ রায়। মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে শিশুটির দেহের ময়না তদন্ত করিয়েছে পুলিশ। তবে প্রাথমিক ভাবে শারীরিক অসুস্থতার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ জানায়। আকস্মিক ঘটনায় শোকস্তব্ধ পরিবারটি।
শিশুটির পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে পেটে ব্যথা হচ্ছিল বলে সে জানিয়েছিল। তার জন্য তাকে ওষুধ দেওয়া হয়। বাবা সৌরভ রায় জানান, এ দিন সকালে সুস্থ অবস্থাতেই তাঁর ছেলে দুধ খেয়ে স্কুলের উদ্দেশে গাড়িতে চেপে রওনা দিয়েছিল।
মধ্য কলকাতার মৌলালি অঞ্চলের একটি স্কুলে নার্সারির পড়ুয়া ছিল তনুশ। ঘটনার সময়ে অন্য এক পড়ুয়ার মা-ও ওই স্কুলগাড়িতে ছিলেন। অন্য এক অভিভাবক জানান,
স্কুলের কাছে নামার সময়েই শিশুটি অসুস্থ বোধ করতে থাকে। দু’-তিন বার তার বমি হয়। এর পরেই শরীর নিস্তেজ হয়ে যেতে থাকে। ওই অবস্থায় তাকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ওই অভিভাবক ও স্কুলগাড়ির চালককে জানানো হয় যে, বাচ্চাটির নাড়ির গতি পাওয়া যাচ্ছে না। চিকিৎসার জন্য তাকে দ্রুত নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যেতে বলা হয়। কিন্তু সেখানে নিয়ে গেলে ওই শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত এন আর এসে ছুটে যান তনুশের বাবা-মা। আকস্মিক ঘটনায় স্তম্ভিত তনুশের স্কুল কর্তৃপক্ষও। এ দিন রাতেই ময়না তদন্ত হয় শিশুটির দেহের। তনুশ যেখানে পড়ত, সেই ক্যালকাটা বয়েজ় স্কুলের অধ্যক্ষ রাজা ম্যাকগি বলেন, ‘‘খুবই দুঃখজনক ঘটনা। গোটা স্কুল শোকাহত। আমরা তনুশের জন্য বিশেষ প্রার্থনার ব্যবস্থা করেছি। পরীক্ষার পরে এক দিন ছুটিও দেওয়া হবে।’’
শিশুটির কী ঘটে থাকতে পারে?
শিশুরোগ চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ জানান, অনেক ক্ষেত্রে হৃদ্যন্ত্রের শিরায় কিংবা হৃদ্স্পন্দনে গোলমাল থাকলে এই ধরনের মৃত্যু ঘটতে
পারে। তিনি বলেন, ‘‘এ ভাবে অনেক সময়ে মাঠে খেলোয়াড়দের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। এক বার কলকাতার অন্য একটি স্কুলে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। এ সব সমস্যা মূলত হৃদ্যন্ত্রের গোলমালেই হয়। তাতে রোগীর আচমকা মৃত্যু হতে পারে।’’