গ্রাস: অগ্নিকাণ্ডে এ ভাবেই ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে ঘরগুলি। যুদ্ধ চালাচ্ছে দমকল। শনিবার, কেষ্টপুরে। নিজস্ব চিত্র
গত কয়েক দিন ধরে ঘটে যাওয়া পর পর অগ্নিকাণ্ডে এ বার যুক্ত হল কেষ্টপুর।
বিধাননগর পুরসভার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে কেষ্টপুরের রাজবংশীপাড়ায় শনিবার বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ একটি বেড়া ও টালির বাড়িতে প্রথমে আগুন লাগে। সেই আগুন ছড়িয়ে আরও ছ’টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘটনাস্থলে যায় দমকলের তিনটি ইঞ্জিন। আধ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন দমকলকর্মীরা। দমকল সূত্রের খবর, সব মিলিয়ে সাতটি বেড়ার ঘর ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। হতাহতের কোনও খবর নেই। দমকলের প্রাথমিক অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রথমে যে বাড়িতে আগুন লাগে সেই বাড়ির গৃহকর্ত্রী ইলেকট্রিক কেটলিতে জল বসিয়ে রান্না করছিলেন। সুইচ বোর্ডে আগুনের ফুলকি দেখা যায়। এর পরেই আগুন ধরে যায়। ওই ঘরে থাকেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত এক বৃদ্ধ। তাঁকে নিয়ে কোনও ক্রমে বেরিয়ে আসেন গৃহকর্ত্রী। ছুটে আসেন বাসিন্দারা। তাঁরাই জল দিয়ে আগুন নেভানোর প্রাথমিক কাজ শুরু করেন।
খবর দেওয়া হয় দমকলে। পৌঁছয় পুলিশও। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে যায়। তত ক্ষণে ওই বাড়ির পিছনে আরও ছ’টি বেড়ার ঘরে আগুন ধরে যায়। আতঙ্কিত হয়ে বাসিন্দারা জল আনতে ছোটাছুটি শুরু করেন। তবে অগ্নিদগ্ধ ঘরগুলি থেকে বাসিন্দারা বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন। কিন্তু বালতির জল দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা সফল হয়নি। দমকল কাজ শুরুর আগেই সাতটি বাড়ি ভস্মীভূত হয়ে যায় এবং একটি বাড়ির জলের ট্যাঙ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত একটি বাড়ির সদস্য গৌর মণ্ডল জানান, তিনি কাজে গিয়েছিলেন। খবর পেয়ে এসে দেখেন, সব পুড়ে শেষ।
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের প্রাক্তন সচিব মাইকেল মণ্ডল জানান, সম্ভবত শর্ট সার্কিটের জেরে এমন ঘটনা। যে বাড়িগুলিতে আগুন লেগেছে, তার সদস্যদের দ্রুত উদ্ধার করে স্থানীয় ক্লাবঘরে রাখা হয়েছে। পুড়ে যাওয়া ঘরগুলির একটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। বাকি ছ’টিতে ভাড়াটেরা থাকেন। প্রাক্তন সচিব জানান, প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াবে। আপাতত ওয়ার্ড কমিটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন বাড়ির জন্য ১০ হাজার টাকা এবং ভাড়াটেদের পাঁচ হাজার টাকা দেবে। ক্ষতিগ্রস্ত জলের ট্যাঙ্কের জন্যও টাকা দেওয়া হবে।
স্থানীয়দের একাংশ জানান, সম্প্রতি এলাকার একটি ক্লাবেও আগুন লেগেছিল। বিধাননগর পুরসভার কর্মীরা এ দিনই ঘটনাস্থল সাফাই শুরু করেছেন।