প্রতীকী ছবি
সিবিআই অফিসার সেজে ব্যবসায়ীকে অপহরণ এবং মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় আরও সাত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল লালবাজার। এই নিয়ে ওই ঘটনায় মোট ১০ জন গ্রেফতার হল। এখনও এক জন পলাতক বলে দাবি তদন্তকারীদের।
ধৃত সাত জনের এক জন একটি বৈদ্যুতিন মাধ্যমের কর্মী। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির প্রধাননগর থেকে অভিষেক সেনগুপ্ত নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেন কলকাতা পুলিশের গুন্ডা দমন শাখার তদন্তকারীরা। আরও এক অভিযুক্ত স্বরূপ ঘোষকেও ধরা হয় শিলিগুড়ি থেকে। বাকি পাঁচ জনের নাম অনির্বাণ কাঞ্জিলাল, অর্ঘ্য সেনগুপ্ত, রাজু মণ্ডল, জুলফিকার আলি এবং আশরাফ আলি। প্রথম তিন জনের বাড়ি নেতাজিনগর থানা এলাকায়। বাকি দু’জনের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার শাসনে। বুধবার রাতেই তাদের কলকাতা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিষেক ও অনির্বাণ ঘটনার মূল মাথা। বৈদ্যুতিন মাধ্যমের কর্মী অভিষেককে বুধবারই চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। অভিষেক ও স্বরূপকে এ দিন শিলিগুড়ি আদালতে তোলা হলে দু’দিনের ট্রানজ়িট রিমান্ডের নির্দেশ হয়। আজ, শুক্রবার কলকাতায় নিয়ে আসা হবে তাদের। বৃহস্পতিবার বাকি পাঁচ জনকে আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ১ জুন পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
সরকারি কৌঁসুলি সৌরীন ঘোষাল জানান, নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের দফতরে অভিযুক্তদের যাতায়াত ছিল। ফলে তারা সেখানে পরিচিত মুখ। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েই ব্যবসায়ী অজিত রায়কে অপহরণের পরে সেখানে নিয়ে যায় ধৃতেরা। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে তাদের ঢোকা এবং বেরোনোর তথ্য মিলেছে। চক্রটি আগেও এমন অপরাধ ঘটিয়েছে বলে
পুলিশের অনুমান।
সিবিআই অফিসার সেজে গত সোমবার কসবার ওই ব্যবসায়ীকে তাঁর বাড়ি থেকে অপহরণ করে ধৃতেরা। এমনকি সিবিআই অফিসারদের কায়দায় অপহৃতের বাড়ি থেকে মোবাইল, ল্যাপটপ-সহ সব নিয়ে নেয়। যে গাড়িতে করে অজিতকে অপহরণ করা হয়, তার মাথায় ছিল নীল বেকন লাইট। দু’টি গাড়ি বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
পুলিশ জানায়, অপহরণের পর অজিতকে সোজা নিয়ে যাওয়া হয় নিজাম প্যালেসের ভিতরে গেস্ট হাউসে, যা অনির্বাণ এবং অভিষেকের চেনা ছিল। সেখানে বসেই অপহৃতের এক বন্ধুকে ফোন করে এক কোটি টাকা চাওয়া হয়। না দিলে ব্যবসায়ীকে খুনের হুমকি দেয় তারা। পুলিশ জানায়, অজিতের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়। তদন্তকারীরা জানান, রাজারহাটের একটি জায়গায় মুক্তিপণ বাবদ আদায় করা ১৫ লক্ষ টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে গাড়ি ভাড়া নিয়ে শিলিগুড়ি পালায় অভিষেক এবং স্বরূপ।
তদন্তে জানা গিয়েছে, নিজাম প্যালেসে যাতায়াত ছিল অভিষেকের। সেখানেই অনির্বাণের সঙ্গে আলাপ তার। ওই ব্যবসায়ীকে অপহরণ করলে মোটা টাকা মিলবে ভেবে দু’জন তাঁকে অপহরণের ছক কষে।