প্রতীকী ছবি
রাজ্য জুড়ে সাপ্তাহিক লকডাউনের আগের রাত থেকেই দফায় দফায় গোলমাল শুরু হয়ে গিয়েছিল রাজারহাট-নারায়ণপুর অঞ্চলে। মঙ্গলবার রাতে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে ওই উত্তেজনা সামলায়। বুধবার সকাল থেকে ফের সেখানে শুরু হয় গোলমাল। তবে পুর এলাকার অন্যত্র পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছিল বলেই দাবি পুলিশের। এ দিন লকডাউন বিধি ভাঙার অভিযোগে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে ৫৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটটি গাড়ি বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে নারায়ণপুর থানা এলাকার রামনগরে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায়। বিজেপি কর্মীদের অভিযোগ, রামমন্দির প্রতিষ্ঠা উপলক্ষে পুজোর প্রস্তুতি চলছিল। তখন দুষ্কৃতীরা এলাকায় বোমা ছোড়ে, গুলি চালায়। পোস্টার, ব্যানার ছেঁড়া হয়। তৃণমূলের মদতেই এ সব হয়েছে বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে বিধাননগরের ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায় ও অন্যেরা গেলে তাঁদের ঘিরে শুরু হয় বিক্ষোভ। পুলিশ গেলেও থামেনি বিক্ষোভ। ১০ জনকে গ্রেফতার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
এ দিন সকালে বাসিন্দাদের সঙ্গে পুলিশের ফের বচসা হয়। অভিযোগ, সকালে পুজো উপলক্ষে বাসিন্দারা বেরোলে পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। রাস্তায় গাছ ফেলে আটকানোর চেষ্টা হয় বলেও দাবি। পুলিশের অবশ্য দাবি, লকডাউন বিধি মেনে চলতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তা না মানায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে বেগ পেতে হয়। দুপুরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। দমদম পার্ক, লেক টাউনের কয়েকটি জায়গায় পুজো করেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। রাজারহাট-নিউ টাউনের বিধায়ক সব্যসাচী দত্তের অভিযোগ, এই গোলমালে জড়িতদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক কারবারে যুক্ত থাকার অভিযোগ আছে। ডেপুটি মেয়র ও পুলিশের মদতে এ সব হয়েছে বলে তাঁর দাবি। এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, “রামমন্দির প্রতিষ্ঠা উৎসবের প্রস্তুতির মাঝে পুলিশ ঢুকে ব্যানার-হোর্ডিং ছিঁড়ে ফেলে। ইকো পার্কের গেটের হোর্ডিং সরিয়ে ফেলেছে ওরা। এর ফলে মানুষের আবেগে আঘাত লেগেছে।”
বিধাননগরের ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ নারায়ণপুরে থাকেন। গত রাতে বাসিন্দারা তাঁকে জানান, দুষ্কৃতীরা বোমা-গুলি ছুড়ছে। তিনি বলেন, “এর পরেই প্রশাসনের তরফে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ করার আশ্বাস দেওয়া হয়। পুজো আটকানো বা হোর্ডিং-ব্যানার ছেঁড়ার মিথ্যা অভিযোগে উত্তেজনা ছড়ানো হচ্ছে।” যদিও এই একটি ঘটনা বাদে বিধাননগর পুর এলাকার রাস্তাঘাট এ দিন ফাঁকা ছিল। প্রশাসনের দাবি, অধিকাংশ বাসিন্দাই লকডাউন মেনেছেন।