এসএসকেএম হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
এসএসকেএম হাসপাতালের ভিতরে এক রোগীর আত্মীয়কে বেধড়ক মারধরের ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে আলিপুর এবং চেতলা থেকে তাদের ধরে ভবানীপুর থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম আরমান বড়ুয়া, জিৎ ঘোষ, অভিজিৎ ঘোষ, নিয়াজ় আহমেদ এবং শাহনওয়াজআলি খান। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে চারটি মোটরবাইক। পুলিশের দাবি, ওই বাইকগুলি নিয়ে রবিবার হাসপাতালে তাণ্ডব চালিয়েছিল ধৃতেরা। তবে তাদের হাতে থাকাহকি স্টিক কিংবা লাঠি এখনও উদ্ধার করা যায়নি। সোমবার ধৃতদের আলিপুর কোর্টে হাজির করানো হলে বিচারক চার দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠান।
রবিবার সকালে হামলার ওই ঘটনাটি ঘটে। এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ার সেন্টারের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন বাঁকুড়ার বাসিন্দা সৌরভ মোদক। তাঁর বৃদ্ধ বাবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার কথা ছিল ওই দিন। সৌরভ অভিযোগে জানিয়েছেন, তিনি যখন ট্রমা কেয়ারের বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন, সে সময়ে ১০-১২ জনের একটি দল হকি স্টিক, লাঠি নিয়ে সেখানে আসে। ভয় পেয়ে সৌরভ দৌড়তে শুরু করলে অভিযুক্তেরা তাঁকে ধরে ফেলে বেধড়ক পেটায়। মাথায় গুরুতর চোট পান সৌরভ। বর্তমানে তিনি এসএসকেএমেই চিকিৎসাধীন।
সৌরভের অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের চেষ্টা, মারধর-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তদন্তকারীরা পাঁচ অভিযুক্তকে শনাক্ত করেন। রবিবার রাতেই ভবানীপুর থানার ওসি সত্যব্রত দাশগুপ্তের নেতৃত্বে একটি দল আলিপুর এবং চেতলায় অভিযুক্তদের খোঁজে হানা দেয়। পাঁচ জনকে ধরা হয় তাদের বাড়ি থেকে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত শনিবার রাতে। লেক গার্ডেন্সের এক তরুণীকে কেন্দ্র করে অভিযুক্তদের সঙ্গে গোলমাল বেধেছিল অপর একটি গোষ্ঠীর। সাময়িক ভাবে তা মিটে গেলেও পরে চেতলা এবং আলিপুর জেলের মাঠে উভয় পক্ষে ফের হাতাহাতি হয়। যাতে কয়েক জন জখম হয়। ওই ঘটনায় একটি মামলাও রুজু করা হয় আলিপুর থানায়।
এক তদন্তকারী অফিসার জানান, ধৃত অভিযুক্তেরা রবিবার জানতে পারে, যে গোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের মারপিট হয়েছিল, সেই দলেরকয়েক জন এসএসকেএমে চিকিৎসার জন্য গিয়েছে। এর পরেইঅভিযুক্তেরা হকি স্টিক, লাঠি নিয়ে এসএসকেএমে আসে। তাদের সেখানে দেখতে পেয়ে অপর গোষ্ঠীর সদস্যেরা পালিয়ে যায়। তাদের পালাতে দেখে সৌরভও দৌড়শুরু করেন। ধৃতেরা পুলিশের কাছে দাবি করেছে, সৌরভকে পালাতে দেখে তাদের সন্দেহ হয়, সে অন্য গোষ্ঠীরই সদস্য। তাই তাঁকে ধরে ফেলে মারধর করা হয়। তবে,ধৃতদের এই দাবি যাচাই করে দেখছে পুলিশ।