কাহিল: তীব্র গরমে চাকরিপ্রার্থীদের মিছিলে হেঁটে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এক তরুণী। মঙ্গলবার, ধর্মতলায়। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
প্রায় ৪০ ডিগ্রি তাপের মধ্যেই বেরিয়েছিল দু’টি মিছিল। দুপুরে চাকরিপ্রার্থীদের সেই দু’টি মিছিলে অসুস্থ হয়ে পড়লেন চার চাকরিপ্রার্থী। ইন্টারভিউ বঞ্চিত উচ্চ প্রাথমিক চাকরিপ্রার্থীদের মিছিলে অসুস্থ হয়ে পড়েন শর্মিষ্ঠা দাস বারিক নামে এক চাকরিপ্রার্থী। নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীদের মিছিলে অসুস্থ হয়ে পড়েন রাসমণি পাত্র, তনয়া বিশ্বাস, বিল্ব ঘোষ নামে তিন চাকরিপ্রার্থী।
মঙ্গলবার দুপুর ২টো নাগাদ ইন্টারভিউ বঞ্চিত উচ্চ প্রাথমিক চাকরিপ্রার্থীদের মিছিল শুরু হয় বিড়লা তারামণ্ডলের কাছ থেকে। মিছিলের গন্তব্যস্থল ছিল ধর্মতলার শহিদ মিনার। মিছিল ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিংয়ে পৌঁছলে কয়েক জন চাকরিপ্রার্থী তপ্ত রাস্তায় বসে পড়ে স্লোগান দিতে থাকেন। নিয়োগের দাবিতে স্লোগান দিতে দিতেই শর্মিষ্ঠা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর চোখে-মুখে জল দেওয়া হয়, হাওয়া করা হতে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে।
এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘এই গরমে মানুষ বাইরে বেরোতে ভয় পাচ্ছেন। আর আমরা পিচ-গলা রাস্তায় বসে নিয়োগের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছি। যত দিন না পর্যন্ত সিট আপডেট করে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তত দিন আমাদের এই আন্দোলন চলতেই থাকবে।’’ চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, উচ্চ প্রাথমিকে সিট আপডেট করে ইন্টারভিউ নেওয়া হয়নি। তাই তাঁরা এখনও ইন্টারভিউ বঞ্চিত হয়ে আছেন।
এ দিনের অন্য মিছিলটি শুরু হয়েছিল দুপুর ৩টে নাগাদ, সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে। মিছিল শেষ হয় গান্ধী মূর্তির পাদদেশে। তবে তার আগেই অসুস্থ হন তিন জন। নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীদের ওই মিছিলে যোগ দেওয়া অভিষেক সেন, বলেন, ‘‘মিছিল যখন জানবাজারের কাছে পৌঁছয় তখন তনয়া, রাসমণি এবং বিল্ব গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন। মাথা ঘুরে রাস্তায় পড়ে যান তিন জনেই। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের অ্যাম্বুল্যান্সে করে তিন জনকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাসমণি এবং তনয়াকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হলেও বিল্বকে এখনও পর্যবেক্ষণের জন্য হাসপাতালে রেখে দেওয়া হয়েছে।’’
নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীদের ধর্নামঞ্চে এ দিন পেরোলো ১১২৯ দিন। চাকরিপ্রার্থীরা জানাচ্ছেন, বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ-সহ শিক্ষাকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে বেশ কয়েক বার। এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘সরকার থেকে আমাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা নিয়ে একটা চেষ্টা হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু কাজ কিছু হয়নি। ফলে ফের নিয়োগের দাবিতে এই প্রবল গরমে পথে নামতে বাধ্য হয়েছি।’’ অভিষেক জানান, তাঁদের নিয়োগ নিয়ে এই মাসে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি রয়েছে। সেই দিকেই তাঁরা তাকিয়ে আছেন।