প্রতীকী ছবি।
পাওনাদারদের দাবি, তিনি ফুটপাতবাসী নন। বাজার থেকে তোলা টাকা ফেরত না দিতে চেয়ে বাড়ি ছেড়ে ফুটপাতে গিয়ে থাকেন। অভিযোগ, পুলিশকে সে সব না জানিয়ে সেই পাওনাদারেরা ‘ফুটপাতবাসী’ ওই ব্যক্তিকে শুধু মারধর করাই নয়। টাকা আদায়ের জন্য তাঁর হাত গরম চাটুর উপরে চেপে ধরলেন।
শনিবার রাতে ওই ঘটনায় পিন্টু কাপাথ, প্রবীর ভট্টাচার্য, বিশ্বজিৎ রায় এবং গৌরাঙ্গ বর্ধন নামে চার জনকে গ্রেফতার করেছে রবীন্দ্র সরোবর থানা। পুলিশ জানায়, ওই চার জন দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক মাঝবয়সী ব্যক্তির উপরে ত্যাচার চালিয়েছেন।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের ধারণা, টাকা-পয়সার লেনদেন ঘিরেই দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল। পুলিশ জানায়, ধৃতেরা জেরার মুখে জানিয়েছেন তাঁরা দিলীপের থেকে টাকা পান। শেক্সপিয়র সরণির একটি জমির ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’
দিলীপের কাছে রয়েছে এবং সেই জমি সস্তায় পাইয়ে দেবেন বলে দিলীপ কয়েক বছর আগে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে প্রায় এক কোটি টাকা নিয়েছিলেন। অভিযোগ, জমি তো দূর, জমির পরচাটুকুও দিলীপ দেখাতে পারেননি। পাওনাদারেরা দিলীপের সন্তোষপুরের বাড়িতে হানা দিলে তিনি উধাও হয়ে যান। ফুটপাতে থাকা শুরু করেন। তবে ধৃতেরা এই সব অভিযোগ লিখিত ভাবে জানাননি বলেই দাবি পুলিশের।
পুলিশ জানায়, শনিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ঢাকুরিয়ার পঞ্চাননতলা থেকে দিলীপকে তুলে প্রথমে বালিগঞ্জের জামির লেনে নিয়ে যান ওই চার জন। এবং সেখানে তাঁকে মারধর করার পরে ফুটপাতের একটি খাবারের দোকানের গরম চাটুতে দিলীপের বাঁ হাত ঠেসে ধরা হয়েছিল। তার পরে পিন্টুর ট্যাক্সিতে চাপিয়ে দিলীপকে আলিপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। পিন্টুই দেখেন দিলীপ পঞ্চাননতলার ফুটপাতে শুয়ে আছেন। তিনিই বাকিদের ফোন করে খবর দেন।
পুলিশ জানায়, দিলীপের দাবি, তাঁকে পঞ্চাননতলা থেকে জামির লেন পর্যন্ত হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়। তার পর গরম চাটুতে হাত চেপে দেওয়া হয়। ওই চার জনের দাবি শেক্সপিয়র সরণির ওই জমির পরচা আলিপুরে তাঁর আত্মীয়ের বাড়িতে রয়েছে বলে দিলীপ জানিয়েছিলেন। তাই অভিযুক্তেরা দিলীপকে আলিপুরে নিয়ে যান। কিন্তু আলিপুরে পৌঁছে তাঁরা বুঝতে পারেন দিলীপ তাঁদের ধোঁকা দিচ্ছেন। তখনই রাস্তায় গোলমাল শুরু হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, সেই সময়ে আলিপুর থানার এক কনস্টেবল সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি, ‘কিডন্যাপ’, ‘এক কোটি টাকা’ এমন কয়েকটি সন্দেহজনক শব্দ শুনে থানায় খবর দেন। আলিপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দিলীপ ও বাকিদের থানায় নিয়ে আসে। রাতে রবীন্দ্র সরোবর থানার পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করে।