বিপন্ন: পূর্ব কলকাতা জলাভূমি। ফাইল চিত্র
পূর্ব কলকাতা জলাভূমি বেআইনি দখলদারি ও নির্মাণের মাধ্যমে ক্রমেই ভরাট হয়ে আসছে। গত ১৫ বছরে কী ভাবে সেই জলাভূমি ভরাট হয়েছে তা উপগ্রহ চিত্রেও ধরা পড়েছে। এর পরেই জলাভূমি সংরক্ষণে ও বেআইনি নির্মাণ বা দখলদার সরিয়ে তা পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। সেই সংক্রান্ত একটি টাস্ক ফোর্স তৈরি ও জলাভূমি সংরক্ষণে নির্দিষ্ট ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ তৈরিরও নির্দেশ দিয়েছিল।
কিন্তু রাজ্য সরকারের তরফে গত শুক্রবার পরিবেশ আদালতে যে ‘অ্যাকশন টেক্ন রিপোর্ট’ (এটিআর) জমা পড়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, জলাভূমি ভরাট সংক্রান্ত অভিযোগ ৩৫৭টি। অথচ মাত্র পাঁচটির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, এই শম্বুক গতিতে যদি জলাভূমি সংরক্ষণে পুলিশ-প্রশাসন পদক্ষেপ করে, তা হলে রামসার কনভেনশন অনুযায়ী ঘোষিত এই ‘আন্তর্জাতিক গুরুত্বসম্পন্ন জলাভূমি’ কি আদৌ বাঁচানো সম্ভব হবে? এই পরিস্থিতিতে আজ, সোমবার পরিবেশ আদালতে পূর্ব কলকাতা জলাভূমি মামলার শুনানি হওয়ার কথা। সেই সঙ্গে শব্দদূষণ সংক্রান্ত একটি মামলারও শুনানি হবে এ দিন।
এই মামলায় বিধাননগরের জঞ্জাল ফেলার জায়গা মোল্লার ভেড়ির প্রসঙ্গটিও উঠে এসেছিল। অভিযোগ উঠেছিল, মোল্লার ভেড়ি থেকে উপচে পড়া জঞ্জাল জলাভূমিতে পড়ে তার একাংশ বুজিয়ে ফেলা হচ্ছে। তার প্রেক্ষিতে পরিবেশ আদালতের নির্দেশ ছিল, জঞ্জাল জলাভূমিতে পড়া আটকাতে ওই এলাকা ঘিরে ফেলতে হবে। রাজ্য সরকার দাখিল করা এটিআর-এ জানিয়েছে, ঘেরা শুরু হয়েছে এবং চলতি বছরের মে-তে কাজ সম্পূর্ণ হবে।
মামলার আবেদনকারী পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত যদিও ওই এটিআর-এর যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর মতে, এখনও তো পূর্ব কলকাতা জলাভূমি কতটা জায়গা জুড়ে রয়েছে, সেই চিহ্নিতকরণের কাজই সম্পূর্ণ হয়নি। সুভাষবাবুর কথায়, ‘‘পূর্ব কলকাতা জলাভূমি মানে তো শুধুই জলাভূমি নয়, তার মধ্যে স্থলভাগও রয়েছে। এখন কোনটা জলাভূমির এলাকা, কোনটা নয়, সেটাই যদি চিহ্নিত না করা যায়, তা হলে কী ভাবে একে বাঁচানো সম্ভব হবে?’’