প্রতীকী ছবি।
চুরির গল্প ফেঁদেও শেষরক্ষা হল না। কাহিনির গরুকে গাছে তুলতে গিয়েই পুলিশের তৎপরতায় ধরা পড়ে গেল অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত-সহ সকলে।
সূত্রের খবর, এই ঘটনায় সোমবার তিন জনকে গ্রেফতার করেছেন পোস্তা থানার তদন্তকারীরা। ধৃতদের মধ্যে রয়েছে অভিযোগকারী সুশীল সোনি, এক অভিযুক্ত বিমল সোনি এবং তাদের
সাহায্যকারী চন্দ্রপ্রকাশ বর্মা ওরফে চাঁদু। ধৃতদের মঙ্গলবার ব্যাঙ্কশাল আদালতের এসিএমএম (১) মনোদীপ দাশগুপ্তের এজলাসে তোলা হয়েছিল। বিচারক তাদের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনার সূত্রপাত গত বৃহস্পতিবার। পোস্তা থানার বড়তলা এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী সুশীল পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে জানায়, পার্ক স্ট্রিটের একটি গয়নার দোকান তাকে প্রায় সাড়ে চারশো গ্রাম সোনার বাট দিয়েছিল গয়না তৈরি করে দেওয়ার জন্য। যার মূল্য প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা। সুশীল দাবি করে, সে ওই সোনা বিমলকে দিয়েছিল গয়না বানিয়ে দেওয়ার
জন্য। কিন্তু তার অভিযোগ, গয়না তৈরির বদলে ওই সোনা নিয়ে চম্পট দিয়েছে বিমল।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, বিমলের বাড়ি হুগলির হিন্দ মোটরে। কিন্তু সেখানে সে নেই। মোবাইল ফোনের সূত্রে পুলিশ খবর পায়, বিমল রয়েছে দিঘায়। সেই মতো তাকে ধরতে দিঘায়
পৌঁছে পুলিশ দেখে, বিমলের ফোন বন্ধ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নতুন একটি নম্বর ব্যবহার করছে সে। এক তদন্তকারী জানান, নতুন নম্বরের বিস্তারিত কল তালিকা খতিয়ে দেখতে গিয়ে জানা যায়, সুশীলের পরিচিত চাঁদুর সঙ্গে নিয়মিত কথা বলেছে পলাতক বিমল। অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরে সুশীলের মতো চাঁদুকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল পুলিশ। এর পরেই চাঁদুর ফোনের কল তালিকা খতিয়ে দেখা হয়। তাতে দেখা যায়, তার সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে সুশীলের।
তদন্তকারীরা জানান, এর পরেই বিভিন্ন সূত্র মারফত বিমলকে সোমবার কলকাতায় ডেকে এনে গ্রেফতার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই সে চুরির গল্প ফাঁস করে দেয়। তার পরেই গ্রেফতার করা হয় সুশীল ও চাঁদুকে। সুশীলের দোকান থেকে উদ্ধার করা হয় একশো গ্রামের কিছু বেশি সোনা।
পুলিশের অভিযোগ, সুশীল, চাঁদু এবং বিমল মিলে ঠিক করেছিল, চুরির গল্প ফেঁদে পুরো সোনাই তারা আত্মসাৎ করবে। তার পরে ওই সোনা বিক্রি করে হিন্দ মোটরে একটি ফ্ল্যাট কেনা হবে বিমলের নামে। সেই সঙ্গে আরও কিছু জিনিসপত্র কেনার পরিকল্পনা ছিল ধৃতদের।