—প্রতীকী ছবি।
ডাকঘরের পার্সেলের ভিতরে মাদক পাঠানোর অভিযোগে একটি চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে রাজ্য পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় চার কেজি মাদক। যার বাজারদর প্রায় আট কোটি টাকা। ধৃতদের নাম সফি ইসলাম শেখ, গুড্ডু শেখ এবং সুরজ শেখ। সকলেই মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। তাদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে বহরমপুর থানায় মামলা রুজু করেছেন এসটিএফের গোয়েন্দারা।
এসটিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি তাদের কাছে খবর আসে, নাগাল্যান্ড থেকে ডাক বিভাগের পার্সেলের মাধ্যমে এই রাজ্যে মাদক পাচার করা হচ্ছে। সেই মতো ওত পেতে বুধবার হাওড়া স্টেশন থেকে সফিকে ধরা হয়। তাকে জেরা করে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ওই দিনই নাগাল্যান্ড থেকে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা এবং নবগ্রাম ডাকঘরে সফির নামে দু’টি পার্সেল পাঠানো হয়েছে। যা সফির নির্দেশ মতো নিয়ে গিয়েছে গুড্ডু ও সুরজ। এর পরেই গোয়েন্দাদের একটি দল মুর্শিদাবাদের কাশিমবাজার থেকে ওই দু’জনকে গ্রেফতার করে।
পুলিশের দাবি, ধৃতদের জেরায় জানা গিয়েছে, বাজেয়াপ্ত হওয়া মাদক আসলে হেরোইন তৈরির কাঁচামাল। তার সঙ্গে রাসায়নিক মিশিয়ে তৈরি করা হত বিশুদ্ধ হেরোইন। এর পরে সেই মাদক এজেন্টের মাধ্যমে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে, বিশেষত নদিয়া এবং দুই ২৪ পরগনায় ছড়িয়ে দেওয়া হত।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ডাকঘরের মাধ্যমে ওই পার্সেল পাঠালে ঝুঁকি কম। কারণ, কোন পার্সেলে কী আছে, তা পাঠানোর আগে দেখা হয় না। তারই সুযোগ নিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের মাদক কারবারিদের কাছ থেকে পার্সেলে মাদক পুরে রাজ্যে নিয়ে আসত সফি। ওই পার্সেল বুক করা হত নাগাল্যান্ড বা মণিপুরের কোনও ডাকঘর থেকে। রাজ্য পুলিশের এসটিএফের পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু জানান, সড়কপথে বা ট্রেনে মাদক আনার ঝামেলা বেশি। সেই কারণে কারবারিরা এখন উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে মাদক আনতে বেছে নিচ্ছে ডাকঘরকে।
এসটিএফ সূত্রের খবর, এর আগে পার্সেলের মাধ্যমে মাদক পাচারের কথা জানানো হয়েছিল ডাক বিভাগকে। যাতে তারা স্ক্যানারের মাধ্যমে তল্লাশি চালিয়ে তবেই পার্সেল বুক করে। কিন্তু সেই নিয়ম এখনও কার্যকর হয়নি।