খাঁ খাঁ: সমাবেশে যোগ দিতে গিয়েছেন অনেক কর্মী। ফাঁকা সল্টলেকের উন্নয়ন ভবন। বৃহস্পতিবার। ছবি: প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়
আলো জ্বলছে, পাখা চলছে। অথচ, কাজ করছেন নামমাত্র লোক।
সাধারণ দিনে বিকাশ ভবন, জলসম্পদ ভবন, সেচ ভবন কিংবা উন্নয়ন ভবনের মতো সরকারি বাড়ির ভিতরে ও বাইরে গিজগিজে ভিড় থাকে। বিকাশ ভবনের বিভিন্ন তলে কর্মীদের ভিড় দেখা যায়। এ দিন ওই অফিসগুলিতে ঢুঁ মেরে দেখা গেল, অনেক দফতরেই কর্মীর সংখ্যাহাতে গোনা।
শাসক দলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই কলকাতা শহর থমকে গিয়েছিল। রাস্তায় বেরিয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে নাস্তানাবুদ হয়েছেন মানুষ। এমনকি ধর্মতলার উদ্দেশে রওনা দিয়েও চিংড়িঘাটা, মানিকতলা পেরোতে পারেননি তৃণমূলের বহু কর্মী-সমর্থক। এমন পরিস্থিতিতে সল্টলেকের বিভিন্ন সরকারি অফিসে কর্মীদের উপস্থিতিও উল্লেখযোগ্য ভাবে কম দেখা গেল।
বিকাশ ভবনের ছ’তলায় স্কুলশিক্ষা দফতরের একটি অফিসের বাইরে দাঁড়ানো এক আধিকারিক বললেন, ‘‘পদস্থ আধিকারিকদের আসতেই হয়েছে। এ ছাড়া, হাজিরা এ দিন ছিল কম। অনেকে ছুটিও নিয়েছেন। কেউ কেউ হয়তো সমাবেশে গিয়েছেন।’’
বাম আমলে ব্রিগেডের সমাবেশের কয়েক দিন আগে থেকেই সরকারি অফিসগুলিতে প্রচার চলত। অফিস ছেড়ে ঘোষিত ভাবেই ব্রিগেডে যেতেন সরকারি কর্মীদের বড় অংশ। জলসম্পদ ভবনের চারতলায় দাঁড়ানো এক কর্মীর কথায়, ‘‘এই আমলে তেমনটা হয় না। কেউ চাইলে ছুটি কিংবা অর্ধদিবস ছুটি নিয়েই যেতে হয়। তবে যাঁরা দূর থেকে যাতায়াত করেন, তাঁদের অনেকেই এ দিন আসতে পারেননি।’’
আরও একটু দূরে উন্নয়ন ভবনের একতলা তখন খাঁ খাঁ করছে। ইলেকট্রিক্যাল সার্কলের একটি ঘুপচি ঘরে বসা এক কর্মীর কথায়, ‘‘আমি উল্টোডাঙা স্টেশনের কাছে থাকি। সকালে রাস্তায় বাস-অটোর খুব সমস্যা ছিল। অফিস আধিকারিক গাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। তাই আসতে পেরেছি।’’ ওই সরকারি ভবনেরই আর এক কর্মীর বক্তব্য, ‘‘কর্মীদের অনুপস্থিতি তো রয়েছেই। তবে উন্নয়ন ভবনের অনেক অফিসেই কর্মীদের অবসরের পরে শূন্য পদে নিয়োগ হয়নি। তাই একটু বেশিই ফাঁকা লাগছে। অন্য দিন ঠিকাদারদের জমায়েত থাকে। এ দিন তাঁরাও আসেননি।’’
যানবাহনের অভাবের পাশাপাশি যানজটে আটকেও নাকাল হয়েছেন অনেকে। তাঁদের মধ্যে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরাও রয়েছেন। ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে যোগ দিতে বেরোনো লোকজনকে বেলা ১১টার সময়ে নিউ টাউনের মেজর আর্টেরিয়াল রোডে পেঁচার মোড় কিংবা সিলিকন ভ্যালির মতো রাস্তায় কাতারে কাতারে আটকে পড়তে দেখা যায়। মূলত রাজারহাট-নিউ টাউন, বারাসত, দেগঙ্গার মতো এলাকা থেকে তাঁরা ধর্মতলার দিকে রওনা দিয়েছিলেন। কিন্তু চিংড়িঘাটা, মানিকতলার বেশি এগোতে পারেননি ওই কর্মী-সমর্থকেরা। শেষে নিউ টাউনের রাস্তায় বসে রীতিমতো চড়ুইভাতি সারেন তাঁরা। বহু মানুষ ভিড় করেন ইকো পার্কেও।