প্রতীকী ছবি।
চাঁদা বাকি। তাই আলিপুর আদালতের বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলেন না দেড় হাজার আইনজীবী।
ওই আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার বার অ্যাসোসিয়েশনের ২৬টি পদে নির্বাচন ছিল। মোট ভোটার ছিলেন ৩৯০০ জন। তাঁদের মধ্যে আলিপুর দায়রা আদালতের (জজ কোর্ট) সদস্য সংখ্যা ২৫০০, ফৌজদারি আদালতের ১৪০০। কিন্তু গণনার সময়ে ধরা পড়ে, ওই দুই আদালত মিলিয়ে ভোট দিয়েছেন ২০১৫ জন সদস্য। প্রায় হাজার দুয়েক সদস্যের ভোটই পড়েনি। এর পরেই বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়। পরে জানা যায়, বার্ষিক ছ’শো টাকা চাঁদা বাকি থাকায় ভোটার তালিকায় নামই ওঠেনি প্রায় হাজার দেড়েক আইনজীবীর। আর শ’তিনেক সদস্য ভোটে অংশগ্রহণ করেননি।
বার অ্যাসোয়িয়েশনের এক পদাধিকারী বলেন, ‘‘নির্বাচনের দেড় মাস আগে বকেয়া চাঁদা জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। এ-ও বলা হয়েছিল, চাঁদা না দিলে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হবে। তার পরেও প্রায় হাজার দেড়েক আইনজীবী চাঁদা দেননি।’’
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ছিল ভোটগ্রহণ। ভোট শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। বার অ্যাসোসিয়েশনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই তালিকা দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। একাধিক বার নির্দেশিকা জারি করার পরেও প্রায় দেড় হাজার আইনজীবী মাত্র ৬০০ টাকা চাঁদা দেননি!’’ আলিপুর বার অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসিক ৫০ টাকা চাঁদা ধার্য করা রয়েছে। সময়ের অভাবে অধিকাংশ আইনজীবী প্রতি মাসে চাঁদা দিতে পারেন না। তাই ভোটের আগে বকেয়া চাঁদা দিয়ে দেওয়ার রীতি চালু হয়েছিল। কিন্তু এ বছরই ব্যতিক্রম ঘটেছে।
আলিপুর আদালতের এক বর্ষীয়ান আইনজীবী বলেন, ‘‘এখানকার বার অ্যাসোসিয়েশন বাম জমানাতেও বিরোধীদের দখলে ছিল। সেই বিরোধীরা এখন শাসকের ভূমিকায়। সম্প্রতি আদালতে রাজনৈতিক মেরুকরণ হয়েছে। দেখা গিয়েছে, আইনজীবীদের একাংশ আর শাসক দল সমর্থিত বার অ্যাসোসিয়েশনে অধীনে থাকতে ইচ্ছুক নন। সে কারণেই হয়তো ভোটদানে বিরত থাকতে ইচ্ছে করেই চাঁদা বকেয়া রেখেছেন। কারণ বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে ‘নোটা’ নেই। তাই কৌশলে ভোটদানে বিরত থাকতেই তাঁরা বকেয়া চাঁদা দেননি।’’