পুরনো সেই পিচবোর্ডের টিকিট দেওয়া হচ্ছে যাত্রীদের।
শ্রীরামপুর থেকে কলকাতায় কাজে যাবেন বলে মঙ্গলবার সকালে স্টেশনে টিকিট কাটতে গিয়েছিলেন শঙ্কর দাস। একটু তাড়া ছিল তাঁর। কিন্তু টিকিট দিতে বিলম্ব হওয়ায় একটু বিরক্তই হলেন তিনি। অন্য দিন এ কাজে বেশি সময় লাগে না। দ্রুত লাইন এগোয়। কিন্তু মঙ্গলবার যেন লাইন কিছুতেই এগোচ্ছিল না। লাইন ধরে কাউন্টারের সামনে এসে যখন পৌঁছলেন টিকিট চাইতেই তাঁকে হাতে ধরিয়ে দেওয়া হল পিচবোর্ডের টিকিট— খাকি রঙা, তাতে মোটা কালো কালিতে ছাপানো শ্রীরামপুর-হাওড়া।
একটু অবাকই হলেন শঙ্করবাবু। হঠাৎ আবার পিছনের দিকে চলে এলাম নাকি! যখন সব কিছুই কম্পিউটারাইজড ছিল, আবার পুরনো স্মৃতি উস্কে দেওয়া কেন! তবে লাইনে দাঁড়াতে বিরক্ত হলেও সেই কত বছর আগে হারিয়ে যাওয়া টিকিট হাতে পেয়ে একটি স্মৃতি হাতড়ানোর সুযোগও পেলেন তিনি। শুধু একা শঙ্করবাবুই নন, সোমবারে স্ট্র্যান্ড রোডে পূর্ব রেলের সদর দফতরের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শহরতলির যাত্রীরা এমনই টিকিট হাতে পেয়েছেন। টিকিট কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে ঘটাং শব্দে টিকিটে তারিখ ছাপার আওয়াজটাও যেন অনেককে নস্ট্যালজিক করে তুলেছে।
নিউ কয়লাঘাটে পূর্ব রেলের ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১২ তলায় থাকা রেলের সার্ভাররুম সম্পূর্ণ ভাবে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে সোমবারই। ফলে অনলাইন টিকিট বুকিং পরিষেবা সোমবার রাত থেকেই পুরোপুরি বিকল হয়ে গিয়েছে। আপাতত বন্ধ রয়েছে পূর্ব রেল, দক্ষিণ-পূর্ব রেল এবং উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের টিকিট বুকিং।
আপৎকালীন পরিস্থিতিতে কাজ চালানোর জন্য সেকেন্দ্রাবাদের সার্ভারের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে রেল সূত্রে খবর। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে। সার্ভার ভস্মীভূত হয়ে যাওয়ায় শহরতলির ট্রেনের কম্পিউটারাইজ টিকিট পরিষেবাও ব্যাহত হয়েছে। ফলে আপাতত ফের পিচবোর্ডের টিকিটেই কাজ চালাতে হচ্ছে বলে বলে রেল সূত্রে খবর।