Raj Bhavan CCTV Footage

অবশেষে রাজভবনের সে দিনের সিসিটিভি ফুটেজ হাতে পেল পুলিশ, মহিলার বয়ানের সঙ্গে কতটা মিলল?

রাজভবনের সিসিটিভি ফুটেজ চেয়ে আগেই চিঠি দিয়েছিল লালবাজার। কিন্তু রাজ্যপাল বিবৃতি দিয়ে রাজভবনে পুলিশের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেন। সেখানকার কর্মীদের সহযোগিতা করতেও নিষেধ করেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ মে ২০২৪ ১০:২৮
Share:

রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।

রাজভবনের সিসিটিভি ফুটেজ হাতে পেল কলকাতা পুলিশ। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির যে অভিযোগ হেয়ার স্ট্রিট থানায় জমা পড়েছে, তার ভিত্তিতেই চলছে অনুসন্ধান। রাজ্যপাল সংবিধানের রক্ষাকবচ পান। তাই তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি তদন্ত সম্ভব নয়। লালবাজার আগেই জানিয়েছিল, কোনও ব্যক্তিবিশেষের বিরুদ্ধে তদন্ত নয়, নির্দিষ্ট একটি অভিযোগের অনুসন্ধান করছে তারা। তার অঙ্গ হিসাবেই সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে।

Advertisement

রাজভবনের সিসিটিভি ফুটেজ রাজ্যের পূর্ত দফতরের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছে পুলিশ। তারাই রাজভবনের নিরাপত্তার দায়িত্বে। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাতেই ওই দিনের ফুটেজ পুলিশের হাতে এসেছে। পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। অভিযোগকারিণীর বয়ানের সঙ্গে ফুটেজের কিছু অংশ মিলেও গিয়েছে বলে খবর। মিলেছে মহিলার বক্তব্যের সময়ও। তবে কোন সময়ে কী ঘটেছে, ফুটেজ ঘেঁটে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এর আগে পুলিশ ওই ফুটেজ চেয়ে রাজভবন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছিল। কিন্তু সেখান থেকে কিছু দেওয়া হয়নি। রাজ্যপাল রাজভবনের সমস্ত কর্মচারীকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, পুলিশের সঙ্গে কোনও সহযোগিতা করা যাবে না। রাজভবনের ঘটনা নিয়ে কেউ বাইরের কারও সঙ্গে কথাও বলতে পারবেন না।

Advertisement

এর মাঝেই বৃহস্পতিবার ঘটনার দিনের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করেন রাজভবন কর্তৃপক্ষ। সকালে রাজভবনে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ওই ফুটেজ দেখানো হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর পুলিশ ছাড়া রাজ্যের যে কোনও নাগরিক চাইলেই ফুটেজ দেখতে পাবেন বলে জানিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেই মতো যাঁরা ফুটেজ দেখতে গিয়েছিলেন, তাঁদের দেখানো হয়। ২ মে, যে দিন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দায়ের হয়েছিল, সে দিন বিকেলের ফুটেজ প্রকাশ করে রাজভবন। ১ ঘণ্টা ১৯ মিনিটের সেই ফুটেজে অভিযোগকারিণীকে দু’বার দেখা গিয়েছে। এক বার তিনি রাজভবনের দিক থেকে হন্তদন্ত হয়ে পুলিশ আউটপোস্টের দিকে যাচ্ছেন। এবং কিছু ক্ষণ পর সেখান থেকে বেরিয়ে পাশের ঘরে যাচ্ছেন। নর্থ গেটের সামনের দু’টি ক্যামেরা থেকে এই দৃশ্য দেখানো হয়।

অভিযোগকারী মহিলা অবশ্য জানিয়েছিলেন, রাজভবনের কনফারেন্স রুমে তাঁর শ্লীলতাহানি করা হয়েছিল। সেখানকার কোনও ফুটেজ দেখানো হয়নি। রাজভবনের ভিতরের কোনও ফুটেজও প্রকাশ করা হয়নি। দেখা গিয়েছে কেবল বাইরের চত্বরটুকু। সূত্রের খবর, রাজভবন জুড়ে মোট ৪০টি সিসি ক্যামেরা রয়েছে। তবে প্রতিটিই নীচের তলায়। উপরে যেখানে রাজ্যপাল থাকেন, সেখানে কোনও ক্যামেরা নেই।

শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করার পরেও কেন তাঁর ছবি এবং ফুটেজ প্রকাশ্যে আনা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিযোগকারিণী। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যপাল একটি অপরাধ করেছিলেন। আমার ছবি প্রকাশ করে আবার অপরাধ করলেন। আমি যত দূর জানি, আইন অনুযায়ী অভিযোগকারিণীর অনুমতি ছাড়া তাঁর ছবি বা পরিচয় প্রকাশ করা যায় না।’’

সংবিধানের রক্ষাকবচ থাকার কারণে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযোগে কী করণীয়, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছিল, এ বিষয়ে আইন এবং সংবিধান বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিচ্ছে তারা। সেই অনুযায়ী অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। যদিও এর মাঝে বিবৃতি জারি করে রাজভবন চত্বরে পুলিশের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছেন রাজ্যপাল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement