গত ১৬ ডিসেম্বর বারাসত থেকে সাইবার প্রতারণায় অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
গত ১৬ ডিসেম্বর বারাসত থেকে এক সাইবার প্রতারককে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। বাঁশদ্রোণী এলাকার একটি জালিয়াতির মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সারা দেশের ৩০০-র বেশি মামলায় অভিযুক্তের যোগ রয়েছে, জানাল পুলিশ। অন্তত ৬৫ কোটি টাকার দুর্নীতি চক্রের সঙ্গে তিনি যুক্ত।
অভিযুক্তের নাম তন্ময় পাল। ৩৪ বছরের ওই যুবককে গ্রেফতারির পর ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিজেদের হেফাজতে পায় কলকাতার সাইবার থানার পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই সাইবার দুর্নীতি চক্রের মূল পর্যন্ত পৌঁছনোর চেষ্টা চলছে। এর মাঝেই নতুন বছরের প্রথম দিনে কলকাতা পুলিশ সাইবার দুর্নীতি নিয়ে সতর্ক করেছে সাধারণ মানুষকে। উদাহরণ হিসাবে এই ঘটনা এবং গ্রেফতারির কথাও উল্লেখ করেছে।
বাঁশদ্রোণীর বাসিন্দা রাজীব চক্রবর্তী গত মাসে সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তাঁর অনুমতি ছাড়া তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ৪৬ লক্ষ টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছিল বলে অভিযোগ। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ওই টাকা গিয়েছিল বারাসতের একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। খোঁজ করে তন্ময়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর অ্যাকাউন্টেই গিয়েছিল ৪৬ লক্ষ টাকা। অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও এক জনের সন্ধান পাওয়া যায়। ১৯ ডিসেম্বর হাওড়ার লিলুয়া থেকে সেই শান্তনু গায়েনকেও গ্রেফতার করে পুলিশ।
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, অভিযুক্ত এবং তাঁর সহযোগীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সারা দেশের ৩০০-র বেশি সাইবার প্রতারণা মামলার সঙ্গে কোনও না কোনও ভাবে জড়িত। ওই সব মামলায় ৬৫ কোটি টাকার সাইবার দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
কী ভাবে প্রতারণা?
মূলত ফোন করে, হোয়াট্সঅ্যাপের মাধ্যমে বা টেলিগ্রাম চ্যানেলের মাধ্যমে ‘শিকার’ ধরে এই প্রতারকেরা। সাধারণ মানুষকে অল্প অল্প করে টাকা বিনিয়োগের পরামর্শ দেওয়া হয়। লোভ দেখানো হয় অল্প বিনিয়োগে বেশি আয়ের। বাঁশদ্রোণীর অভিযোগকারীকেও সে ভাবেই ‘ফাঁসানো’ হয়েছিল বলে অভিযোগ। নতুন বছরের প্রথম দিনে কলকাতা পুলিশের সতর্কবার্তা, কেউ যেন এই প্রতারকদের ফাঁদে পা না-দেন। কোনও অচেনা জায়গায় অচেনা ব্যক্তির কথায় ভরসা করে অর্থ বিনিয়োগ না-করার পরামর্শও দিয়েছে পুলিশ।