বিজেপির হেস্টিংস কার্যালয় ফাইল চিত্র।
কলকাতা পুরভোটে প্রার্থী হওয়ার জন্য মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা শেষ হচ্ছে বুধবার। তার ৭২ ঘণ্টা আগে রবিবারও প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে পারল না রাজ্যের প্রধান এবং বিধানসভার একমাত্র বিরোধী দল বিজেপি। অথচ, এ দিনই ত্রিপুরার পুরভোটে দলের জয়ের আনন্দে কলকাতায় রাজ্য দফতরে মিষ্টি বিতরণ করে ফেলল তারা।
বিজেপির হেস্টিংস কার্যালয়ে এ দিন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ, কলকাতা পুরভোট পরিচালনা কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কেন্দ্রীয় সহ পর্যবেক্ষক অমিত মালবীয়-সহ কয়েক জন নেতা প্রার্থী বাছাই নিয়ে বৈঠক করেন। রাহুল পরে বলেন, “কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডের প্রার্থীর নাম ঠিক হয়ে গিয়েছে। সোমবার ঘোষণা করা হবে। আমাদের প্রার্থী তালিকায় মহিলা, যুব এবং ডাক্তার, আইনজীবী, বিজ্ঞানী, শিক্ষক-সহ সমাজের বিভিন্ন পেশার মানুষের প্রতিনিধিত্ব থাকবে।”
বিজেপি সূত্রের খবর, কলকাতা পুরভোটের প্রার্থী তালিকায় বড় কোনও চমক থাকার সম্ভাবনা কম। এ বার প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দলের পুরনো কর্মীদের উপরেই বেশি ভরসা রাখা হচ্ছে। দলের রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য আগেই জানিয়েছেন, তৃণমূলের বিক্ষুব্ধদের অনেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। কিন্তু তাঁদের প্রার্থী করার কথা ভাবা হচ্ছে না। বিধানসভা ভোটে তৃণমূল-সহ অন্য দল এবং অভিনয় জগতের অনেককে শেষ মুহূর্তে দলে নিয়ে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। কিন্তু সেই কৌশলে তাদের ২০০ আসন জিতে রাজ্যে সরকার গড়ার লক্ষ্য পূরণ হয়নি। বিজেপি-র একাংশের ব্যাখ্যা, ওই কৌশলে লাভ না হওয়াতেই এ বার পুরনো কর্মীদের প্রার্থী করার কথা ভাবা হচ্ছে।
শনিবারও হেস্টিংসে কলকাতার পুরভোট নিয়ে বৈঠক করেছিল বিজেপি। সেখানে সুকান্ত, দিলীপ ছিলেন না। কলকাতার ভোটের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই নেতা সাংসদ অর্জুন সিংহ এবং রাজ্য সহ সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার এবং এ দিন— দুই বৈঠকের একটিতেও ছিলেন না। অর্জুন গোয়ায় ভাইপোর বিয়েতে ব্যস্ত রয়েছেন। রাজু জানান, তিনিও দলের অন্য কর্মসূচিতে ব্যস্ত ছিলেন।
কলকাতার পুরভোটের প্রার্থী ঘোষণা করতে না পারলেও ত্রিপুরার পুরভোটের ফল নিয়ে অবশ্য রাজ্য বিজেপির উৎসাহের অন্ত নেই। তাদের রাজ্য দফতরে এ দিন আবির খেলে, মিষ্টি বিতরণ করে ত্রিপুরায় দলের জয় উদযাপন করা হয়। বিভিন্ন জেলার বিজেপি দফতরেও ত্রিপুরার ভোটের ফল নিয়ে উচ্ছ্বাস চোখে পড়েছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, “ত্রিপুরাবাসী প্রমাণ করে দিয়েছেন, তৃণমূল যতই এখান থেকে গুন্ডা-বদমাশ নিয়ে গিয়ে ওখানে গণ্ডগোল করার চেষ্টা করুক, তাতে কোনও লাভ হবে না। আমরা ত্রিপুরাবাসীর এই রায়কে স্বাগত জানাই। তাঁদের ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন জানাই।” বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী টুইট করেছেন, “আগরতলা পুরনিগম এবং অন্য সব নগর পঞ্চায়েত ও পুরসভায় বিপুল জয়ের জন্য ত্রিপুরা বিজেপি এবং সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবকে আন্তরিক অভিনন্দন। দুর্নীতিগ্রস্ত এবং ফ্যাসিস্ত তোলামূল দলকে ধুয়েমুছে সাফ করে দেওয়ার জন্য ত্রিপুরাবাসীর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।” ত্রিপুরায় বিজেপিকে জেতানোর জন্য সেখানকার মানুষকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ।