হকারদের ‘ভেন্ডিং সার্টিফিকেট’ দেওয়ার কাজও শুরু হবে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকেই। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।
এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই শহরে ফের হকার অভিযান শুরু করছে কলকাতা পুরসভা। তার আগে কলকাতা শহরের রাস্তায় বসে আর হকারি করতে দেওয়া হবে না বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার টাউন ভেন্ডিং কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়েছে বলেই পুরসভা সূত্রে খবর। বর্তমানে যে সব হকার রাস্তায় বসে ব্যবসা করছেন, তাঁদের আরও এক বার সতর্কবার্তা দেওয়া হবে। তাঁরা রাস্তা ছেড়ে ফুটপাতের অংশে উঠে না-গেলে তাঁদের আর কোনও ভাবেই রাস্তায় বসতে দেওয়া হবে না। এই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকেই অভিযানে নামতে চায় পুরসভা। বিশেষ করে মধ্য কলকাতার নিউ মার্কেট, চাঁদনি মার্কেট, বিধান মার্কেট-সহ ধর্মতলা এলাকায় ধারাবাহিক ভাবে পুরসভা অভিযান চালাবে বলে জানা গিয়েছে। যাতে কলকাতার এই প্রাণকেন্দ্রের রাস্তাঘাট সাধারণ মানুষের চলাচলের উপযুক্ত করা যায়।
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, প্রথম দফায় অভিযান চালিয়ে কলকাতা পুরসভা যে সমীক্ষা করেছিল, তার ভিত্তিতে হকারদের ‘ভেন্ডিং সার্টিফিকেট’ দেওয়ার কাজও শুরু হবে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকেই। আপাতত ৮ হাজার ৭২৭ জন হকারকে এই শংসাপত্র দেওয়া হবে। প্রথম দফার সমীক্ষায় প্রায় ১৪ হাজারের বেশি হকারের নাম নথিভুক্ত হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে থেকে প্রথম পর্যায়ে ৮ হাজার ৭২৭ জনকে এই শংসাপত্র দেওয়ার কথা। এই শংসাপত্র দিতে ‘এক জানালা নীতি’র ব্যবহার করতে চান পুরসভার আধিকারিকেরা, যাতে কোনও রকম হয়রানি ছাড়াই হকারেরা এই শংসাপত্র সংগ্রহ করতে পারেন। তবে এই শংসাপত্র পাওয়ার প্রাথমিক শর্ত হচ্ছে পুরসভার যাবতীয় নিয়ম মেনে সংশ্লিষ্ট হকারকে চলতে হবে। তবেই শংসাপত্রের পাশাপাশি পুরসভা থেকেও সহযোগিতা পেতে পারবেন হকাররা।
প্রসঙ্গত, গত বছর লোকসভা নির্বাচনের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নের এক বৈঠকে রাস্তার যেখানে-সেখানে হকার বসা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। পরে কলকাতা পুরসভা-সহ হকার সংক্রান্ত বিষয়ে দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের নিয়ে নবান্ন এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছিলেন তিনি। তার পরেই সুষ্ঠু হকারনীতি তৈরি করতে একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল কলকাতা পুরসভা। তার ভিত্তিতেই ‘ভেন্ডিং সার্টিফিকেট’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে কলকাতা পুরসভার লক্ষ্য, অভিযানে নেমে রাস্তা থেকে হকার সরিয়ে তাঁদের ফুটপাতে তুলে দেওয়া।