ঘুম চুরি আটকাবেন কী করে? ছবি: সংগৃহীত।
ঘুমের নতুন ‘ওষুধ’ পেয়েছেন। রাতে বিছানায় শুয়ে শুয়ে কিছু ক্ষণ ফোন ঘাঁটেন। সমাজমাধ্যমের পাতা ‘স্ক্রল’ করতে করতে করতে কখন যে দু’চোখের পাতা বন্ধ হয়ে আসে, বুঝতেই পারেন না। তা ছাড়া সারা দিন নানা কাজে ব্যস্ত থাকেন। ফোন ঘাঁটার সময়ও বিশেষ পান না। তবে সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ঘুমোতে যাওয়ার আগে সমাজমাধ্যমে চোখ রাখলে আদতে উপকার তো হয়ই না, উল্টে অনিদ্রাজনিত সমস্যা বাড়াবাড়ি আকার ধারণ করতে পারে। সেখানে বলা হয়েছে, ফোনের জন্য প্রতি এক ঘণ্টা সময় ব্যয় করলে ২৪ মিনিট করে ঘুম চুরি হয়ে যাচ্ছে। ‘ফ্রন্টিয়ার্স ইন সাইকিয়াট্রি’ জার্নালে তা প্রকাশিত হয়েছে।
নরওয়ের প্রায় ৫০ হাজার সদ্য কলেজে পা রাখা এবং কলেজপড়ুয়ারা এই সমীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। ঘুম সংক্রান্ত নানা প্রশ্নোত্তর পর্বের মাধ্যমে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পড়ুয়াদের তিনটি দলে ভাগ করা হয়েছিল। প্রথম দলটি শুধুমাত্র সমাজমাধ্যম ব্যবহার করেন, এমন পড়ুয়াদের নিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। দ্বিতীয় দলটি তৈরি হয়েছিল সমাজমাধ্যম এবং ওটিটি, দুই-ই ব্যবহার করেন, এমন পড়ুয়াদের নিয়ে। তৃতীয় দলটিকে সমাজমাধ্যম কিংবা ওটিটি-তে চোখ রাখতে বারণ করা হয়েছিল। তার বদলে অন্য ধরনের কাজে নিযুক্ত থাকতে বলা হয়েছিল। প্রতিটি দলের সদস্যদের ঘুমের সময় এবং মান কী ভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে, তা পৃথক ভাবে পর্যবেক্ষণও করা হয়েছিল।
কে কখন ঘুমোতে যাচ্ছেন, কে টানা কত ক্ষণ ঘুমোচ্ছেন, কখন কার ঘুম ভাঙছে, রাতে নিরবচ্ছিন্ন ঘুম হচ্ছে, না কি মধ্যরাতে ঘুম ভেঙে যাচ্ছে, সারা দিন ধরে চনমনে থাকছেন, না কি ক্লান্তি বোধ করছেন— সমস্ত খুঁটিনাটি তথ্য পর্যবেক্ষণ করে গবেষকেরা দেখেছেন, যাঁরা রাতে বেশির ভাগ সময়টাই সমাজমাধ্যম কিংবা ওটিটির জন্য ব্যয় করেন, তাঁদের ঘুমের চক্র সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘুমোতে যাওয়ার আগে প্রতি এক ঘণ্টায় ২৪ মিনিট করে ঘুম নষ্ট হচ্ছে। অনিদ্রাজনিত সমস্যাও ৫৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
ঘুম নষ্ট হওয়ার কারণ হিসাবে গবেষকেরা মূলত ‘স্ক্রিনটাইম’কেই দায়ী করেছেন। সমাজমাধ্যম, সিনেমা দেখা, ফোনে লেখালিখি করা, কিংবা পুরনো ছবি দেখা— সবই কিন্তু স্ক্রিনটাইমের অন্তর্গত। তবে ঘুমের উপর এক একটি কাজের প্রভাব এক এক রকম।