অনুব্রত মণ্ডল বর্তমানে তিহাড় জেলে। তাঁকে নিয়ে লেখা ‘খেলা হবে’ বই আপাতত তৃণমূল কার্যালয়ে পড়ে আছে। — বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
গত বিধানসভা ভোটে প্রবল জনপ্রিয় হয়েছিল তাঁর মুখের ‘খেলা হবে’ স্লোগান। দেওয়াল লিখন, পোস্টার, মিছিল, জনসভা পেরিয়ে সেই স্লোগান জায়গা করে নেয় বইয়ের প্রচ্ছদে। ‘খেলা হবে’ নামেই লেখা হয় বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে একটি বই। এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে, যখন অনুব্রত তিহাড় জেলে বন্দি, তখন সেই বইয়ের বান্ডিলও লুটিয়ে পড়েছে বোলপুরের তৃণমূল কার্যালয়ে।
গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হয়ে গত কয়েক মাস ধরেই জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট। সম্প্রতি গ্রেফতার হয়েছেন তাঁর কন্যা সুকন্যাও। যে কোনও ভোটের আগে দলীয় দফতর সরগরম থাকত। এ বার প্রথম অন্য ছবি দেখছে বীরভূম। প্রচারমাধ্যমে ‘গুড়-বাতাসা’, ‘চড়াম-চড়াম’-এর মতো ‘কেষ্ট-বাণী’ নেই। খাঁ খাঁ করছে বাড়ি, দলীয় কার্যালয়। অনুব্রতকে নিয়ে লেখা ‘খেলা হবে’ বইগুলিও অনাদরে পড়ে ধুলো খাচ্ছে দলীয় কার্যালয়ে। এই পরিস্থিতিতে তাঁর অনুগামীদের অনেকেই হা-হুতাশ করছেন।
অনুব্রত মণ্ডলের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নানা দিক নিয়ে গত বছর লেখা হয় ‘খেলা হবে’ বইটি। সেই সময় বইটি বোলপুরের গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে উদ্বোধন করতে এসেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি জেলা তৃণমূল সভাপতির ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন জেলার মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদেরা। বইটি উদ্বোধন হওয়ার পর থেকে জেলায় তৃণমূলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে বইটি বিক্রি ও প্রচারও করা হয়। কিন্তু অনুব্রত গ্রেফতারের পর থেকে সব কিছু যেমন বদলাতে শুরু করেছে, তেমনই সেই বইয়েরও কদর কমতে দেখা গিয়েছে। এখন সেই বইয়েরই ঠাঁই হয়েছে দলীয় কার্যালয়ের এক কোণে।
বইগুলি এ ভাবে পড়ে থাকতে দেখে হতাশা গোপন করছেন না দলের অনেক কর্মীই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের কর্মীদের অনেকেই বলছেন, “কেষ্টদা যখন জেলায় ছিলেন, তখন তাঁর কদর ছিল। এখন তিনি সামনে নেই। দলে কদরও কমছে। সে কারণেই তাঁকে নিয়ে লেখা বইয়ের এই দুরবস্থা।”