ফাইল চিত্র
পুরনো শিক্ষাবর্ষের শেষ সিমেস্টারের পরীক্ষা হচ্ছে না। নতুন শিক্ষাবর্ষের প্রথম সিমেস্টার শুরু হতে অপেক্ষা করতে হবে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত। তার আগে মাঝের দুই মাস প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিল খড়্গপুর আইআইটি!
ইতিমধ্যেই খড়্গপুর আইআইটির পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের হস্টেলে থাকা পড়ুয়াদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমনকি, আগামী ২০ জুন থেকে আইআইটির হল (হস্টেল) ও মেস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আইআইটি কর্তৃপক্ষ। এমন ঘটনায় শোরগোল পড়েছে আইআইটি জুড়ে। কীভাবে পড়ুয়ারা বাড়ি ফিরবেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও কর্তৃপক্ষের দাবি, লকডাউনের পরে অধিকাংশ পড়ুয়া নিজেদের বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানের হলে রয়েছেন মাত্র হাজার তিনেক পড়ুয়া। তাঁদের মধ্যে আরও এক হাজার পড়ুয়া বাড়ি চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে যেহেতু প্রতিষ্ঠানে কোনও ক্লাস, সেমিনার-সহ শিক্ষা সংক্রান্ত কোনও কার্যক্রম হচ্ছে না তাই পড়ুয়াদের বাড়ি ফিরে যাওয়া উচিত বলে মনে করছেন কর্তৃপক্ষ। ১জুন থেকে আনলক শুরু হয়েছে। চালু হয়েছে রেল যোগাযোগ। তাই পড়ুয়াদের বাড়ি ফিরতে সমস্যা হবে না বলেও জানাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। আইআইটির রেজিস্ট্রার ভৃগুনাথ সিংহ বলেন, “আমাদের প্রতিষ্ঠানের মাত্র ২ হাজার বাদে সকল পড়ুয়া নিজেদের বাড়ি চলে গিয়েছেন। আরও পড়ুয়া বাড়ি যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে। তা ছাড়া সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহের আগে প্রতিষ্ঠান খোলা হচ্ছে না। এর জন্য আমরা মেস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। স্বাভাবিকভাবে যে ক’জন পড়ুয়া রয়েছেন তাঁদেরও বাড়ি চলে যেতে বলা হয়েছে। এতে সারাবছর কাজ করা মেস ও হলের কর্মীরা কয়েকদিন বিশ্রামও পাবেন।”
আইআইটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে খড়্গপুর আইআইটিতে প্রায় ১২হাজার পড়ুয়া রয়েছেন। ক্লাস বন্ধ করে অনলাইন ক্লাস চালু করেছিলেন কর্তৃপক্ষ। পরে সিদ্ধান্ত হয় ২০১৯-’২০ শিক্ষাবর্ষের অন্তিম সিমেস্টারের পরীক্ষা নেওয়া হবে না। ভৃগুনাথ বলেন, “পড়ুয়াদের আগের পরীক্ষার ফল ও অনলাইনে যে ক্লাস হয়েছে তার সমীক্ষা করে এই সিমেস্টারে উত্তীর্ণ করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অগস্টে আইআইটির জয়েন্ট রয়েছে। সেই অনুযায়ী ২০২০-’২১ শিক্ষাবর্ষের প্রথম সিমেস্টার সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে শুরু হবে বলে আশা করছি।” তাই আগামী জুলাই ও অগস্ট মাস পুরোপুরি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষামূলক কার্যক্রম হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক গবেষক পড়ুয়া বলেন, “আমাদের কয়েকজন এখনও ক্যাম্পাসে রয়েছি। কিন্তু দেশ জুড়ে করোনা আক্রান্ত লাফিয়ে বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে যাঁদের বাড়ি কাছে তাঁরা হয়তো চলে যাবে। কিন্তু যাঁদের বাড়ি দূরে তাঁদের পক্ষে তো ট্রেনে যাওয়া তো ঝুঁকি হবে। তাই কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে সকলে খুব উদ্বেগে রয়েছি।” তবে হল ও মেস বন্ধ হলে পড়ুয়ারা কীভাবে ক্যাম্পাসে থাকবেন তা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রেজিস্ট্রার বলেন, “যে সমস্ত পড়ুয়ার বাড়ি ফিরতে খুব সমস্যা তাঁদের বিষয়ে আমরা প্রয়োজনে আলোচনা করব।”