রামমন্দির হলে বাজারের উন্নয়ন কেন হবে না!

এ বার রেলশহরের গোলবাজারে ব্যবসায়ীদের মুখোমুখি হয়ে রেলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ শুনতে হল মেদিনীপুরের সাংসদ তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। এক ব্যবসায়ী তো স্পষ্টই বললেন, “রামমন্দির যদি হতে পারে এই বাজারের উন্নয়ন কেন হবেনা?”

Advertisement

দেবমাল্য বাগচী

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৯ ০০:০৪
Share:

গোলবাজারে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে দিলীপ ঘোষ। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

বছর তিনেক বিজেপি বিধায়ক ছিলেন। তার পরে মাস ছয়েকের সাংসদ। অথচ রেল এলাকা ও বাজারের উন্নয়নে তাঁর কোনও ভূমিকা নেই বলে বারবার অভিযোগ তুলছে তৃণমূল।

Advertisement

এ বার রেলশহরের গোলবাজারে ব্যবসায়ীদের মুখোমুখি হয়ে রেলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ শুনতে হল মেদিনীপুরের সাংসদ তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। এক ব্যবসায়ী তো স্পষ্টই বললেন, “রামমন্দির যদি হতে পারে এই বাজারের উন্নয়ন কেন হবেনা?”

রবিবার ‘খাসতালুক’ খড়্গপুরে উপ-নির্বাচনের প্রচারে এসেছিলেন দিলীপ। এই খড়্গপুর সদর থেকেই ২০১৬ সালে বিধায়ক হন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। আর গত লোকসভা নির্বাচনে মেদিনীপুর থেকে জেতার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র এই বিধানসভাই ৪৫ হাজার ভোটের ‘লিড’ দিয়েছিল দিলীপকে। সেখানেই এ বার উপ-নির্বাচনে গড়রক্ষার লড়াই বিজেপি সভাপতির। প্রার্থী প্রেমচাঁদ ঝা-র সমর্থনে বারবার প্রচারেও আসছেন দিলীপ। এ দিন সকালে প্রচারে বেরিয়ে হুডখোলা গাড়িতে তিনি ঘুরেছেন শহরের ঝোলি ও আয়মা এলাকা। আয়মা রেল এলাকার বাসিন্দাদের অভাব-অভিযোগও শুনেছেন। পরে গোলবাজারে দুর্গেশ্বর মন্দিরে রেলের গোলবাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। সেখানেই ব্যবসায়ীরা রেলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। এ ক্ষেত্রে রেলের আধিকারিকদের উপর দায় চাপিয়ে বিজেপির পাশে থাকার আবেদন জানান দিলীপ।

Advertisement

রেলশহরের প্রধান বাজার এলাকা গোলবাজারের কয়েক হাজার ব্যবসায়ীদের সমস্যা দীর্ঘ কয়েক দশকের। রেলের এই বাজারে বিদ্যুৎ সংযোগ, বিদ্যুতের বিল, রেলের জলকর, পার্কিং-সহ নানা অভাব-অভিযোগ রয়েছে ব্যবসায়ীদের। ২০১৬ সালের বিধানসভা থেকে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত এই ব্যবসায়ীদের একটি বড় অংশকে বিজেপিকে সমর্থন করতে দেখা গিয়েছিল। উপ-নির্বাচনের প্রচারে নেমে ব্যবসায়ীদের পাশে পেতে রেলের বাজারের উন্নয়নে সাংসদ দিলীপ ঘোষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। তৃণমূলের ইস্তাহারেও গোলবাজারে রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন দফতরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগের কথা বলা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জমি ছাড়তে নারাজ বিজেপি রাজ্য সভাপতি এ দিন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। ক্ষোভের আঁচ পেয়ে আগেভাগেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে রেল আধিকারিকদের বিরুদ্ধে আঙুল তোলেন প্রার্থী প্রেমচাঁদ।

অবশ্য এর পরেও ব্যবসায়ীরা মাইক হাতে দিলীপের সামনে রেলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানান। সুভাষ বাজেরিয়া নামে এক ব্যবসায়ীকে বলেন, “রেলের ভাড়া দিচ্ছি না যদি বলা হয়, সেটা মিথ্যা। বলা হচ্ছে, সব ঘরে জল, সব ঘরে বিদ্যুৎ। এখানে একটি শৌচাগার তৈরি করলে সব রেল আধিকারিক চলে আসেন। ঘুষ দিলে সব হয়ে যায়। মোদীজি রেলের বেসরকারিকরণের চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু আমাদের বাজারের উন্নতি হচ্ছে না। আমরা কী পাপ করেছি জানি না!”

সব নালিশ-ক্ষোভই ঠান্ডা মাথায় শুনেছেন বিজেপি নেতারা। পরে দিলীপ বলেন, “এত বিধায়ক, সাংসদ এসেছেন-গিয়েছেন, কিন্তু আপনাদের সমস্যার সমাধান হয়নি। কিন্তু এর মানে এটা নয় যে সমাধান হবে না। আমি সাংসদ ও প্রেমচাঁদ ঝা বিধায়ক হয়ে একসঙ্গে ধাক্কা দিলে গাড়ি তো একটু এগোবে!” পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দিলীপের বক্তব্য, “গোলবাজারের সমস্যা আজকের নয়। আমি চেষ্টা করেছি। কিন্তু এখানকার ডিআরএম কাজ করতে চাইছিলেন না। নতুন ডিআরএম এসেছেন। এ বার হবে। যদি কাজ হয় সেটা দিলীপ ঘোষ ও বিজেপি-ই পারবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement