স্মার্টফোনে পড়াশোনা করছে কিরণ। নিজস্ব চিত্র
কুর্নিশ জানিয়েছে রাজ্য সরকার। জঙ্গলমহলের লড়াকু কন্যাশ্রীর মুশকিল আসানে হাত বাড়িয়েছেন কলকাতার এক ব্যবসায়ীও।
পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড়ের পাশের ব্লক বাঁকুড়ার সারেঙ্গা। সেখানকার খয়েরপাহাড়ি গ্রামের কিরণ কেশরবাণী একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। অনটনের সংসারে স্মার্টফোন কিনতে পারেনি। জঙ্গলে ঘেরা গ্রামে ইন্টারনেট পরিষেবাও অতি ক্ষীণ। কিন্তু করোনা-কালে পড়াশোনার ভরসা তো ফোন আর ইন্টারনেট। তাই রোজ সকালে সাইকেলে ৮ কিলোমিটার জঙ্গলপথ পেরিয়ে সে পড়তে আসে গোয়ালতোড়ের বুলানপুরের কোচিং সেন্টারে। ভরসা সেখানকার স্যরের স্মার্টফোন।
সংবাদপত্রে কিরণের কথা প্রকাশিত হওয়ার পরে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেন অনেকেই। শেষমেশ কলকাতার ব্যবসায়ী তরুণ রায় কিরণকে একটি স্মার্টফোনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। সিমলাপালের এক দোকানের মাধ্যমে সেই ফোন হাতেও পেয়েছে কিরণ। আর ১৪ অগস্ট, কন্যাশ্রী দিবসে রাজ্যের নারী ও শিশুবিকাশ এবং সমাজকল্যাণ দফতর কিরণকে 'একজন উজ্জ্বল কন্যাশ্রী' বলে শংসাপত্র দিয়েছে। ব্লক প্রশাসনের সেই অনুষ্ঠানে কিরণের হাতে নানা শিক্ষা সরঞ্জামও তুলে দেওয়া হয়। সারেঙ্গার বিডিও সংলাপ বন্দ্যোপাধ্যায় ফোনে বলেন, ‘‘মেয়েটির বাবা নেই, আর্থিক অবস্থাও ভাল নয়। খুব কষ্ট করে পড়াশোনা করে। উৎসাহিত করতে শুধু কিরণকেই সে দিন সংবর্ধিত করা হয়েছে।’’
কলকাতার ব্যবসায়ী তরুণ রায় ফোনে বললেন, ‘‘প্রত্যন্ত গ্রামের একটা মেয়ে স্মার্টফোনের অভাবে এত কষ্ট করছে জেনে খারাপ লেগেছিল। ওকে বলেছি, তিন মাস অন্তর রিচার্জও করে দেব।’’ ফোনটা পেয়ে উচ্ছ্বসিত কিরণ। ফোনে বলল, ‘‘কী যে উপকার হল! এখন আর রোজ সাইকেলে অতটা পথ যেতে হবে না।’’ কন্যাশ্রী দিবসের সম্মানও তাকে শক্তি জুগিয়েছে। কিরণ বলছে, ‘‘ব্লক অফিস থেকে বলেছে রাজ্য সরকার আমাদের মতো কন্যাশ্রীদের পাশে আছে। মায়ের ইচ্ছে আমি উচ্চ শিক্ষিত হই। সকলে পাশে থাকলে নিশ্চয়ই সেই ইচ্ছে পূরণ করতে পারব।’’