—নিজস্ব চিত্র।
‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতি নিয়ে দলে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ হয়নি। যাঁরা নেটমাধ্যমে এই নীতির সমর্থনে পোস্ট করছেন, তাঁরা আসলে দলবিরোধী মন্তব্য করছেন। দলের অন্দরে ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নিয়ে বিতর্কের আবহে এমনটাই মন্তব্য করলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে বিরাট জয়ের পর থেকেই এই নীতির স্বপক্ষে দলের ভিতরে এবং বাইরে সবচেয়ে বেশি সরব হয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে, সম্প্রতি অভিষেকের ‘ডায়মন্ড হারবার মডেল’ এবং কিছু ‘ব্যক্তিগত মতামত’-এর বিরোধিতা করে প্রকাশ্যে মন্তব্য করে দলে ‘কোণঠাসা’ হয়েছে পড়েছিলেন কল্যাণ। তৃণমূলের একাংশ মনে করছে, এমন মন্তব্য করে প্রকারান্তরে অভিষেককেই খোঁচা দিলেন তিনি।
কলকাতা পুরভোটের আগে থেকেই ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতি নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে দ্বন্দ্বের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। যা বড় আকার নিয়েছে রাজ্যে পুরভোটের আবহে। নেটমাধ্যমে এই নীতির স্বপক্ষে তৃণমূলের নতুন প্রজন্মের অনেকে পোস্ট করেছেন। এর পরেই শুক্রবার রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ সংক্রান্ত যে সমস্ত পোস্ট নেটমাধ্যমে করা হচ্ছে, তাতে সমর্থন নেই দলের সর্বময়নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন, ‘‘নেতাদের ফেসবুক পোস্ট বিভ্রান্তিকর। দল তা অনুমোদন করে না। অবিলম্বে ওই সব পোস্ট সরাতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ রকম পোস্ট করা অন্যায়। সভানেত্রী নতুন ভাবে নীতি নির্ধারণ করবেন। দলের যাবতীয় নীতি তিনিই ঠিক করবেন।’’
ফিরহাদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ভোটপ্রচারে বেরিয়ে কল্যাণ বলেন, ‘‘দলে এক ব্যক্তি এক পদ নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এটা কেউ কেউ রটিয়ে দিচ্ছে। ফিরহাদ যা বলেছে, ঠিকই বলেছে।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘যাঁরা এই নীতির প্রচার করছে, তাঁরা আসলে দলের বিরুদ্ধে বলছে। দলবিরোধী কাজ করছে। সেটাও ফিরহাদ বুঝিয়ে দিয়েছে।’’
‘ব্যক্তিগত মতামত’ নিয়ে দুই সাংসদের বিবাদ দলের শীর্ষ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে মিটলেও তার রেশ যে এখনও কাটেনি, তা অভিষেকের সাম্প্রতিক মন্তব্যেই বোঝা গিয়েছে। কল্যাণের উদ্দেশে সম্প্রতি অভিষেক বলেছিলেন, ‘‘কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, অভিষেক আগে জিতে আসুক, তার পর মানব। আমায় তখনও মানতে হবে না। তৃণমূলের কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে শক্ত শিরদাঁড়ার প্রমাণ দেখান।’’
শুক্রবার অভিষেকের এমন মন্তব্যেরও জবাব দিয়েছেন কল্যাণ। তিনি বলেন, ‘‘শিরদাঁড়া সোজা করেই পার্টি কর্মীদের পাশে থাকি আমি। পায়ে চোট লেগেছে। কিন্তু পুরভোটের আর অল্প দিন বাকি। ডাক্তারের বারণ সত্ত্বেও কর্মীদের পাশে থেকে দলীয় প্রার্থীকে জেতানোর জন্য প্রচারে বেরিয়েছি। আমার রাজনৈতিক ইতিহাস বলে, আমি দীর্ঘ দিন ধরে শিরদাঁড়া সোজা করে কর্মীদের পাশেই থাকি।’’