পাথরপ্রতিমার কর্মসূচিতে কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও মুকুল রায়। —নিজস্ব চিত্র
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফের ব্যক্তিগত আক্রমণ করলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমায় একটি সভা থেকে ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদের চশমার দাম নিয়ে কটাক্ষ করেছেন কৈলাস। বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা সৌগত রায় পাল্টা বিজেপি নেতার রুচি নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য়, ‘‘বাংলার মানুষ এই ধরনের নিম্নরুচির মানুষকে গ্রহণ করবে না।’’ ওই সভায় তৃণমূল, সিপিএম ছেড়ে কয়েক জন বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন। সভায় উপস্থিত মুকুল রায়ও রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেছেন।
বৃহস্পতিবার কলকাতা থেকে ডায়মন্ড হারবারে একটি দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাওয়ার পথে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার কনভয়ে হামলা হয়। অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ওই কনভয়ের সঙ্গে থাকা কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং মুকুল রায়ের কনভয়েও হামলা হয়েছিল। তার রেশ কাটার আগেই ফের সেই জেলাতেই সভা করল বিজেপি। সোমবার পাথরপ্রতিমার মিলন মোড়ে ওই সভায় অভিষেককে ‘ভাইপো’ সম্বোধন করে কৈলাস বলেন, ‘‘ভাইপো ২৫ লাখের চশমা পরেন। এটা কি মেহনতের পয়সা? নাকি এটা চুরির পয়সা, কয়লা চুরির পয়সা?"
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায় পাল্টা কটাক্ষ করেছেন প্রশ্ন তুলেছেন কৈলাসের রুচি নিয়ে। তিনি বলেন, ‘‘অভিষেক যুবক। ওঁকে নিয়ে এই ধরনের আক্রমণ নিম্নরুচির পরিচয়। কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে আমি নিম্নমানের নেতা বলে মনে করি। মধ্যপ্রদেশে পাত্তা না পেরে অশান্তি সৃষ্টির জন্য এখানে এসেছেন। আর বলছেন চুরির পয়সা, কয়লা চুরির পয়সা। ওদের হাতেই তো কেন্দ্র। তদন্ত করে প্রমাণ দিন।’’
আরও পড়ুন: শুভেন্দুর জন্য বরাদ্দ হল কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা এবং বুলেটপ্রুফ গাড়ি
বিজেপি নেতৃত্বকে নিশানা করে সৌগত বলেন, ‘‘আমরাও বলতে পারি মোদী কত টাকার চশমা পরেন। ৫০০ কোটি টাকা দিয়ে বিমান কিনেছেন। কৈলাসের নিজের ছেলে ভোপালে পুর আধিকারিককে ব্যাট দিয়ে পিটিয়েছিলেন। অমিত শাহের ছেলে জয়ের সম্পত্তি কত গুণ বেড়েছে? এসব প্রশ্ন আমরাও তুলতে পারি। কিন্তু উনি তুলতে পারবেন না। তা হলে দল থেকে ওঁকে বের করে দেবেন।’’
আরও পড়ুন: বিজেপি যখন অফিস ভাঙছিল, কোথায় ছিলেন ববি: জিতেন্দ্র
নড্ডার কনভয়ে হামলার প্রসঙ্গে কৈলাস বলেন, "বাংলার সংস্কৃতি ভালবাসার। অথচ নাড্ডাজিকে ইট ছুড়ে কোন ধরণের ভালবাসা দেখানো হল? এটা কোন ধরনের সংস্কৃতি।" মুকুল রায় বলেন, ‘‘এই সরকার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তার কোনওটাই রাখতে পারেনি। এখানে অনেক এলাকায় এখনও বিদ্যুৎ আসেনি। আমাদের রাজ্যে বিদ্যুতের দাম সবচেয়ে বেশি। মমতাকে নিয়ে বললে আবার মামলা করে দেবে। মামলা দিয়ে মানুষের মুখ বন্ধ করে রাখতে পারবেন না।"
কৈলাস-মুকুলকে আক্রমণ শানিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা শক্তি মণ্ডলও। তিনি বলেন, ‘‘বাংলার মানুষের মন জয় করতে বাইরে থেকে মুখোশ পরিয়ে নেতাদের আনছে বিজেপি। বাংলার সংস্কৃতির ওরা কি বুঝবে? যে দলের নেতারা জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা রবীন্দ্রনাথকেই অপমান করেন, তাঁদের মুখে বড় বড় ভাষণ বাংলার মানুষ মেনে নেবেন না।"