আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। — নিজস্ব চিত্র।
রবিবার সকালে সল্টলেকের ইডি দফতর থেকে একা হেঁটে বেরোতে পারছিলেন না রেশন ‘দুর্নীতি’কাণ্ডে ধৃত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালু। কয়েক ঘণ্টা পর তাঁকে তুলনামূলক ভাবে সুস্থ দেখাল। সিজিও কমপ্লেক্স থেকে একাই হাঁটতে হাঁটতে বেরিয়ে গাড়িতে উঠলেন তিনি। গন্তব্য ব্যাঙ্কশাল আদালত। রবিবারই তাঁকে আদালতে হাজির করাচ্ছে ইডি।
সিজিও থেকে বেরোনোর সময় জ্যোতিপ্রিয় সাংবাদিকদের সামনে বলেন, ‘‘আমার বাঁ দিক গিয়েছে। বাঁ দিকে সবটাই গিয়েছে।’’ এর আগে সকালে যখন তাঁকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, ফেরার পথে তিনি জানান, তাঁর শরীরের এক দিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। আদালতে যাওয়ার পথেও মন্ত্রী একই কথা বললেন। নিজে হাঁটলেও বাঁ হাত নাড়তে দেখা যায়নি তাঁকে। হাতটি নীচে নামিয়ে রেখেছিলেন তিনি। অন্য হাতে নিজেই কয়েকটি ব্যাগ বহন করেছেন। পরে তা ইডির এক আধিকারিকের হাতে তুলে দেন। জ্যোতিপ্রিয়ের শরীরে দুর্বলতার ছাপ ছিল স্পষ্ট।
সকালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য কমান্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মন্ত্রীকে। সেই সময় দেখা যায়, তাঁর পা টলছে। দু’জন ইডি আধিকারিক তাঁকে ধরে ধরে সাবধানে নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের উপরেই শরীরের ভার ছেড়ে দিয়েছিলেন মন্ত্রী। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে বিড়বিড় করে বলেন, ‘‘আমি মরে যাব। অবস্থা খুব খারাপ।’’ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ফেরার সময় তিনি বলেন, ‘‘আমার শরীর অত্যন্ত খারাপ। মৃত্যুশয্যা প্রায়। শরীরের এক দিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে গিয়েছে।’’
জ্যোতিপ্রিয় দীর্ঘ দিন ধরেই সুগারের রোগী। তাঁকে গ্রেফতার করার পর ইডি যখন আদালতে হাজির করেছিল, সেই সময় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন মন্ত্রী। তাঁকে বেশ কিছু দিন হাসপাতালে কাটাতে হয়। সেখান থেকে সুস্থ হয়ে আবার ইডি দফতরে গিয়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত তাঁকে ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে এক দিন আগেই আদালতে হাজির করানো হচ্ছে মন্ত্রীকে।
জ্যোতিপ্রিয় বারবারই দাবি করেছেন, তিনি নির্দোষ। সাংবাদিকদের সামনে একাধিক বার বলেছেন, ‘‘আমি মুক্ত। ইডি-ও বুঝতে পেরেছে আমি মুক্ত। ১৩ তারিখ সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।’’ আদালতে কী হয়, মন্ত্রী নিজে কী বলেন, সে দিকে নজর থাকবে।