রেশন ‘দুর্নীতি’তে ধৃত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।
রেশন ‘দুর্নীতি’তে নাম জড়িয়েছিল আগেই। জেলও খাটছিলেন। সদ্য তাঁকে বনমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার ঠিক এক দিন পরে জামিন চেয়ে আদালতে গেলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। গ্রেফতার হওয়ার ১১৩ দিন পর এই প্রথম তিনি জামিনের আবেদন করলেন।
শনিবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতে জামিন চেয়ে আবেদন করেন জ্যোতিপ্রিয়। জামিনের সপক্ষে তিনি দু’টি যুক্তি দেখিয়েছেন। প্রথমত, নিজের অসুস্থতার কথা আদালতে জানিয়েছেন তিনি। সেই প্রেক্ষিতে জামিন চেয়েছেন। দ্বিতীয়ত, রেশন মামলায় নিজের যোগ অস্বীকার করেছেন বালু। জানিয়েছেন, এই ‘দুর্নীতি’র সঙ্গে তিনি জড়িত নন। তাই তাঁকে জামিন দেওয়া হোক। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
গত ২৭ অক্টোবর ভোর পৌনে ৩টে নাগাদ জ্যোতিপ্রিয়কে গ্রেফতার করেছিল ইডি। তার পর তাঁকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। প্রথমে অসুস্থ হয়ে পড়েন তৎকালীন মন্ত্রী। হাসপাতালে কিছু দিন থাকতে হয় তাঁকে। সেখান থেকে সুস্থ হয়ে জেলে যান। তার পর থেকে জেল হেফাজতেই রয়েছেন বালু। একাধিক বার তাঁকে আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। এক বারের জন্যেও জামিনের আবেদন জানাননি তিনি।
শুক্রবার জানা যায়, জ্যোতিপ্রিয়কে বনমন্ত্রী এবং শিল্পোদ্যোগ মন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজভবনের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জ্যোতিপ্রিয়ের বদলে বিরবাহা হাঁসদা এবং পার্থ ভৌমিক ওই দুই দফতর সামলাবেন। গ্রেফতার হওয়ার সাড়ে তিন মাস পরে দফতর খোয়ালেন জ্যোতিপ্রিয়।
জ্যোতিপ্রিয়ের বিরুদ্ধে যে পদক্ষেপ করা হতে পারে, আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে শুক্রবারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে সামান্য বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। তৃণমূলের একাংশের মতে, বালুকে পুরোপুরি মন্ত্রিসভা থেকেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার অন্য অংশের মতে, তাঁর হাত থেকে দু’টি দফতর কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তিনি এখন দফতরবিহীন মন্ত্রী। এই জল্পনার মাঝেই দেখা গেল আদালতে প্রথম বার জামিন চাইলেন জ্যোতিপ্রিয়। মন্ত্রিত্ব হারানোর পরের দিনই এই আবেদন জানালেন তিনি।
জ্যোতিপ্রিয়ের বিরুদ্ধে রেশন ‘দুর্নীতি’র টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ তুলেছে ইডি। এই মামলায় ধৃত বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল বলেও দাবি করেছে তারা। অভিযোগ, শঙ্কর ২০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে লেনদেন করেছেন। যার মধ্যে অন্তত ৯ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা জ্যোতিপ্রিয়ের। শঙ্করের সঙ্গে তিনি হাসপাতাল থেকেও যোগাযোগ রেখেছিলেন বলে দাবি ইডির। যদিও শঙ্কর নিজে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।