শনিবার সন্দেশখালিতে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের প্রতিনিধিরা। — নিজস্ব চিত্র।
সন্দেশখালিতে যে শিশুটিকে মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে ছুড়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল, তার বাড়িতে গিয়ে দেখা করে এসেছেন রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের প্রতিনিধিরা। শিশুটির চিকিৎসার বন্দোবস্তও করা হয়েছে বলে জানান তাঁরা। কমিশনের হস্তক্ষেপের পর শনিবারই ওই বাড়িতে মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিককে মেডিক্যাল দল পাঠানোর ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।
শিশুটির বাড়ি থেকে বেরিয়ে কমিশনের চেয়ারপার্সন তুলিকা দাস সংবাদমাধ্যমকে জানান, বাড়িতে কেবল মা এবং সেই শিশু রয়েছে। তাঁরা বাড়ি থেকে বেরোতেই ভয় পাচ্ছেন। ফলে চিকিৎসা পরিষেবা মিলছে না।
তুলিকা বলেন, ‘‘ওঁরা খুব ভয় পেয়ে আছেন। বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন না। আমরা গিয়েই প্রথমে জিজ্ঞাসা করেছি, আপনারা কী চান? শিশুর মা জানান, সে দিনের পর থেকে শিশুটিকে তিনি চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে পারেননি। চিকিৎসার বন্দোবস্ত করা হোক। আমরা সঙ্গে সঙ্গে সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছি। শনিবারই বাড়িতে পৌঁছে যাবে মেডিক্যাল দল। এ ছাড়া, ওঁরা যে হেতু বাড়ি থেকে বেরোতে পারছেন না, তাই খাবারের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি দেখতে বলেছি।’’
পরিবারের নিরাপত্তার বন্দোবস্তও করা হয়েছে বলে জানান তুলিকা। কমিশন স্থানীয় থানায় ওই পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়ার কথা জানিয়েছে। তাঁদের বাড়ির সামনে এক জন পুরুষ এবং এক জন মহিলা পুলিশ কর্মী বহাল থাকবেন। কমিশনের চেয়ারপার্সনের কথায়, ‘‘ওঁরা ভয়ে আছেন। আমরা আমাদের ব্যক্তিগত ফোন নম্বর ওঁদের দিয়ে এসেছি। প্রতি দিন সকালে ফোন করে খবর নেব বলে জানিয়েছি। ওঁদের আশ্বস্ত করার যথাসম্ভব চেষ্টা করেছি।’’
গত ১০ ফেব্রুয়ারি সন্দেশখালিতে শিশুর উপর অত্যাচারের অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছিল। এক শিশুকে তার মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে ছুড়ে ফেলা হয়েছিল বলে অভিযোগ। সন্দেশখালির বাসিন্দা ভুজঙ্গ দাসের স্ত্রী সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন, ‘‘মুখে কালো কাপড় বেঁধে পুলিশ এসেছিল। ওদের কারও কারও পায়ে জুতো ছিল না। কেউ আবার চপ্পল পরে এসেছিল। বাইরে থেকে আমার স্বামীকে ডাকছিল। দরজা না খোলায় গালাগালি করে। সন্দেশখালি থানার এক জন ছিল। ওরা আমার কোল থেকে বাচ্চা ফেলে দিয়েছিল। আমার চুলের মুটি ধরে টানে। এমনকি পুরুষ পুলিশ নাইটি টেনেছিল।’’ বিজেপির দাবি, ভুজঙ্গ তাদের দলের কর্মী। সেই কারণেই তাঁর বাড়িতে হামলা হয়েছে।
এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরেই বিষয়টি নিয়ে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন পদক্ষেপ করে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। তার পর শনিবার কমিশনের প্রতিনিধিরা ওই শিশুর বাড়িতে যান।