জুট মিলগুলিকে কাঁচাপাট জোগানের সমস্যা দূর করতে কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রকের অধীনস্থ জুট কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া। ফাইল চিত্র।
চটকল বাঁচাতে উদ্যোগী হল বস্ত্রমন্ত্রক। কাঁচাপাট জোগানের সমস্যা দূর করতে কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রকের অধীনস্থ জুট কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া (জেসিআই) বাজেয়াপ্ত হওয়া পাট কিনে তা চটকলগুলিকে সরবরাহ করতে চলেছে। বেআইনিভাবে মজুতদারির অভিযোগে এই সমস্ত পাট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল বলেই সূত্রের খবর। সম্প্রতি এ ব্যাপারে জেসিআই-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর এ. কে জলি সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকদের চিঠি দিয়েছেন। জেসিআই ওই পাট কেন্দ্রের ঘোষিত ন্যূনতম সহায়ক মূল্যেই কিনবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই সঙ্গে কেনাবেচার খরচ জুড়ে তারা তা চটকলগুলিকে সরবরাহ করবে।
একের পর এক চটকলে উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়ার পিছনে কাঁচামালের জোগানের সমস্যাই মূল কারণ বলে দাবি করে পাট শিল্পের সঙ্গে যুক্তদের। জেসিআই উদ্যোগী হওয়ার পর এই সমস্যার কিছুটা হলেও সমাধান হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে পাট শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সর্বস্তরের মানুষের উপকার হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ পাটের অভাবে রাজ্যে বেশ কয়েকটি চটকলের ঝাঁপ বন্ধ হয়েছে। তবে জেসিআই নিজেই এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করায় বেআইনি মজুতদারদেরও একটি বার্তা দেওয়া যাবে বলে মনে করছে রাজ্য শ্রমদফতর।
জানা গিয়েছে, রাজ্য এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ বেআইনি মজুতদারির বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত ৮০০ টনেরও বেশি পাট বাজেয়াপ্ত করেছে। তা এখন জেলাশাসকদের জিম্মায় রয়েছে। অভিযান অব্যাহত থাকলে এর পরিমাণ আরও বাড়বে।
এই অবস্থায় গত মাসে মুখ্যসচিবের ডাকা বৈঠকে জেসিআইকে বাজেয়াপ্ত পাট কিনে তা চটকলগুলিকে সরবরাহ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক এবং শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্না-সহ রাজ্যের আধিকারিকরা ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এ নিয়ে শ্রমদফতরের যুগ্মসচিব প্রভাস উকিল জেসিআইকে গত ১০ জানুয়ারি ফের চিঠি দেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে মত বদল করে জেসিআই-এর এমডি গত ১৩ জানুয়ারি দুই দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া ও কোচবিহার—এই ছয় জেলার জেলাশাসককে বাজেয়াপ্ত পাট ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে কেনার কথা জানিয়ে দেন। এ ব্যাপারে ইন্ডিয়ান জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের এক কর্তার কথায়, এই পরিমাণ পাটে অল্প কিছুদিন চলতে পারে। তাই পাটের সর্বোচ্চ মূল্যের নির্দেশ প্রত্যাহার না করা হলে সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়।