(বাঁ দিকে) অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সুশান্ত চট্টোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সুশান্ত চট্টোপাধ্যায় প্রয়াত। বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। ওড়িশা এবং কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি ছিলেন তিনি। ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই কলকাতায় যুব কংগ্রেসের মহাকরণ অভিযানে পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনার তদন্তে পরবর্তী কালে যে কমিটি গঠন করা হয়েছিল, তার নেতৃত্বে ছিলেন সুশান্ত। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘‘অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সুশান্ত চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে আমি গভীর ভাবে শোকাহত। বিচারপতি চট্টোপাধ্যায় কলকাতা এবং ওড়িশা হাই কোর্টে বিচারের দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাইয়ের ঘটনার তদন্তের জন্য তাঁকে আমাদের সরকার কমিটির প্রধান নিযুক্ত করেছিল। এই কঠিন সময়ে ওঁর পরিবারের জন্য আমার সমবেদনা রইল। ওঁর আত্মার শান্তি কামনা করছি।’’
হাওড়া জেলা আদালত থেকে আইনজীবী হিসাবে নিজের কর্মজীবন শুরু করেছিলেন বিচারপতি চট্টোপাধ্যায়। ১৯৮৬ সালে তিনি কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি হয়েছিলেন। মূলত নাগরিক এবং সাংবিধানিক বিষয় ছিল তাঁর বিচার্য। কলকাতা থেকে ১৯৯৪ সালে বদলি হয়ে ওড়িশা হাই কোর্টে যান বিচারপতি চট্টোপাধ্যায়। ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত সেখানেই ছিলেন।
২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৩ সালের ঘটনার তদন্তের জন্য নতুন করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই সময়ে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি হিসাবে সুশান্তকেই ওই কমিটির প্রধান করা হয়েছিল। তাঁর নেতৃত্বে সে দিনের ঘটনার তদন্ত হয়। ৩০০-র বেশি সাক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল কমিটি। ২০১৪ সালে সেই তদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। বাম আমলের একাধিক আইপিএস অফিসারের বিরুদ্ধে ওই কমিটি শাস্তির সুপারিশও করেছিল। ওই কমিটি গঠনকে চ্যালেঞ্জ করে সেই সময়ে কলকাতা হাই কোর্টে একাধিক মামলাও হয়।
১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই কংগ্রেসের যুবনেত্রী মমতা মহাকরণ অভিযান করেছিলেন। সেই সময়ে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন ছিল সিপিএমের সরকার। মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন জ্যোতি বসু। মহাকরণ পর্যন্ত পৌঁছনোর আগেই যুব কংগ্রেসের মিছিল পুলিশি বাধার সম্মুখীন হয়। অভিযোগ, সেই দিন মিছিলের উপর গুলি চালিয়েছিল বাম সরকারের পুলিশ। ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মীর মৃত্যু হয়েছিল। সেই ঘটনাকে স্মরণ করে নিহতদের শ্রদ্ধা জানাতে প্রতি বছর ২১ জুলাই শহিদ দিবস পালন করে তৃণমূল।