কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ মামলায় ইডি-সিবিআইয়ের সমন্বয় নিয়ে প্রশ্ন তুললেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সিবিআইকে ইডির সঙ্গে কথা বলে চার্জশিট তৈরি করতে বলেছেন তিনি। জানিয়েছেন, এই প্রাথমিক মামলার পরিণতিও অতীতের সারদা মামলার মতো হয়ে যাক, তা তিনি চান না। আর তদন্তকারী সংস্থাকেই তা নিশ্চিত করতে হবে।
প্রাথমিক মামলায় এর আগে একটি চার্জশিট তৈরি করেছিল সিবিআই। তাদের বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) প্রধান অশ্বিন শেণভি জানান, দ্বিতীয় চার্জশিট তৈরি করা হবে শীঘ্রই। তখনই বিচারপতি ইডির প্রসঙ্গ টেনে আনেন। জানান, ইডির সঙ্গে খুব বেশি যোগাযোগ রাখেনি সিবিআই। তাই চার্জশিটে প্রাথমিক মামলার সব অভিযুক্তের নাম নেই। অবিলম্বে ইডির সঙ্গে সিবিআইকে যোগাযোগ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, সিবিআই শুক্রবারই ইডির সঙ্গে প্রাথমিক মামলার অভিযুক্তদের বিষয়ে আলোচনা করবে। কী পদক্ষেপ করা হল, তা আগামী শুনানিতে জানাতে হবে আদালতকে। আগামী ২১ ডিসেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
সিবিআইয়ের সিটের প্রধান, মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের কথোপকথন—
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়: প্রাথমিক মামলায় কতগুলি চার্জশিট ফাইল করেছেন?
অশ্বিন শেণভি (সিবিআই): এখনও পর্যন্ত একটি চার্জশিট ফাইল করা হয়েছে। আরও একটি করা হবে।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়: ওই চার্জশিটে কাদের নাম রয়েছে? চার্জশিট তৈরির সময়ে ইডির সঙ্গে কোনও সমন্বয় করেছিলেন কি?
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়: আমার কাছে খবর আছে, আপনি ইডির সঙ্গে কম যোগাযোগ করেছেন। তাই সব অভিযুক্তের নাম চার্জশিটে নেই।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়: আজকের মধ্যেই ইডি আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলুন। আশা করি তাঁদের কাছ থেকে আরও অনেক তথ্য পাবেন। না হলে এমন প্রতিষ্ঠিত দুর্নীতির তদন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়: আমি চাই না এটাও আর একটা সারদা মামলা হয়ে যাক। আমি চাই দ্রুত ট্রায়াল শুরু হোক।
বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য (মামলাকারীদের আইনজীবী): চার্জ গঠন করা না গেলে ট্রায়াল শুরু করা যাবে না।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়: পরবর্তী শুনানিতে আমি দেখতে চাই, ট্রায়াল নিয়ে কী পদক্ষেপ করেছে সিবিআই।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়: প্রাথমিক মামলায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। বেআইনি চাকরির বিশাল অঙ্কের টাকা নানা হাতে গিয়েছে। আমি অবাক, এত বড় দুর্নীতির কথা কেউ জানতেন না বলে দাবি করছেন! পুলিশ, গোয়েন্দা কিংবা ছোট-বড় রাজনৈতিক নেতারা দুর্নীতির কথা জানতেন না, এটা হতে পারে না।