কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি।
কলকাতা হাই কোর্টে অস্বস্তিতে মাদক মামলার ‘কিং পিন’ শাহরুখ খানের সহযোগী আমির, ইরশাদ খানরা। শুক্রবার তাঁরা জামিনের আবেদন করলে তা খারিজ হয়ে যায়। শাহরুখের শাগরেদের জামিন দেয়নি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিচারপতি বিভাসরঞ্জন দে’র ডিভিশন বেঞ্চ। মাদক পাচার কাণ্ডে অভিযুক্ত হিসাবে ৬ মাসেরও বেশি সময় ধরে তাঁরা জেলে রয়েছেন। অন্য দিকে, এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত শাহরুখকে ধরতে এখনও সক্ষম হয়নি পুলিশ।
গত ৫ জানুয়ারি হাওড়ার গোলাবাড়ি এলাকা থেকে ইরশাদ খান, আমির হাসান-সহ বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ হেরোইন এবং নগদ টাকা উদ্ধার হয়। রাজ্যের আইনজীবী সঞ্জয় বর্ধন জানান, ইরশাদের কাছ থেকে ১৩ কেজি হেরোইন, ২০ লক্ষের বেশি নগদ এবং কয়েকটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ। হেরোইনের আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৩০ কোটি টাকা। এ ছাড়া আমিরের কাছ থেকে আরও ১০ লক্ষ টাকা এবং মোবাইল ফোন পাওয়া গিয়েছে। আমিরকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, বস শাহরুখের নির্দেশে মাদক লেনদেনের (ডিল) জন্য মণিপুর থেকে তিনি কলকাতায় এসেছিলেন। তাঁর কল রেকর্ড থেকে বেশ কয়েক বার শাহরুখকে ফোন করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, একটা বড় মাদকচক্র কাজ করছে মণিপুর ও কলকাতার মধ্যে। আর ইম্ফল থেকে শাহরুখের শাগরেদরা এসে থাকতেন হাওড়া ময়দান সংলগ্ন এলাকার একটি হোটেলে। তার পর রাতের অন্ধকারে চলত মাদক লেনদেনের কাজ। আর এই প্রক্রিয়ার উপর ইম্ফল থেকে নজর রাখতেন শাহরুখ। সম্প্রতি তাঁরই নির্দেশে রাজ্যে এসে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন আমির। পুলিশের কাছে সে কথা স্বীকারও করেন তিনি। তবে এই মামলার ‘কিং’ শাহরুখকে এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ।
শুক্রবার ধৃতদের জামিনের মামলাটি ওঠে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের অবকাশকালীন ডিভিশন বেঞ্চে। তিনি তাঁদের জামিনের আর্জি খারিজ করে দেন। ফলে ধৃত মাদক পাচারকারীদের এখন জেলেই থাকতে হবে। প্রসঙ্গত, শুক্রবার জামিনের মামলায় নিজের রক্ষণশীল মনোভাবের কথা জানান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। হাই কোর্ট সূত্রে খবর, এক দিনের জন্য অবকাশকালীন ডিভিশন বেঞ্চে বসে ২৪টির মামলার মধ্যে মাত্র একটি মামলায় জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।