—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি চলাকালীন সিবিআইয়ের উপর চটলেন বিচারক। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবীর সওয়াল শুনে বিরক্তি প্রকাশ করেছে আদালত। সিবিআইয়ের আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারকের মন্তব্য, ‘‘আপনাদের ভুল ধরলে তো কেঁদে কূল পাবেন না।’’
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃতদের কয়েক জনকে শনিবার আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ধৃত ‘এজেন্ট’ চন্দন মণ্ডল। তাঁর বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে চাকরি বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। শনিবার আদালতে চন্দনের আইনজীবী তাঁর জামিনের আবেদন জানান। সেই সূত্রেই সিবিআইকে ধমক দেন বিচারক।
যে কোনও শর্তে চন্দনের জামিন চাওয়া হয় আদালতে। চন্দনের তরফে জানানো হয়, তিনি আড়াইশো দিনের বেশি সময় ধরে জেলে রয়েছেন। তাঁকে ‘এজেন্ট’ বলা হচ্ছে। প্রভাবশালীর তকমাও এঁটে দেওয়া হয়েছে। যা ভিত্তিহীন। চন্দনের আইনজীবীর এই সওয়ালের জবাবে সিবিআইয়ের তরফে বলা হয়, বার বার একই কারণ দেখিয়ে জামিন চাইছেন চন্দন। নতুন কোনও কারণ তাঁরা দেখাতে পারছেন না। সিবিআইয়ের এই যুক্তি শুনেই বিরক্তি প্রকাশ করেন বিচারক।
একই কারণ দেখিয়ে বার বার জামিন চাওয়ায় ভুল কিছু দেখেনি আদালত। পাল্টা কেন্দ্রীয় সংস্থার উদ্দেশে বিচারক বলেন, ‘‘আপনারা তো নানা কথা বলতে থাকেন। আপনাদের ভুল যদি ধরা হয়, তা হলে কেঁদে কূল পাবেন না।’’ শেষ কয়েক দিনে সিবিআইয়ের তদন্তে কী অগ্রগতি হয়েছে? তা-ও জানতে চান বিচারক। তাঁর মন্তব্য, ‘‘কেস ডায়েরিটা দেখুন। আমাকে বোকা ভাববেন না। এ ভাবে আদালতের সময় নষ্ট হচ্ছে।’’
নিয়োগ মামলায় ফেব্রুয়ারি মাসে নিজাম প্যালেসে দীর্ঘ ক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় চন্দনকে। জিজ্ঞাসাবাদের শেষে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। চন্দনের বিরুদ্ধে চাকরি বিক্রির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা। তাঁর লেনদেন খতিয়ে দেখে ছ’কোটি টাকার হদিস পেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। এ ছাড়া, চন্দনকে জেরা করে মোট ১৬ কোটি লেনদেনের খোঁজ মিলেছিল। ওই টাকা নাকি তোলা হয়েছিল অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি বিক্রি করে।
সিবিআইয়ের উপর বিরক্তি প্রকাশ করলেও চন্দনের জামিন মঞ্জুর করা হয়নি। আদালত আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চন্দনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। নিয়োগ মামলায় ধৃত রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের শুনানি হবে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর।