ডিএ-র দাবি নিয়ে সংঘাত বাড়ছে। ফাইল চিত্র।
মহার্ঘ ভাতা নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ক্রমেই বাড়ছে কর্মীদের। মঙ্গলবার গণ ছুটির কর্মসূচি ঘোষণার পাশাপাশি একঝাঁক আগাম কর্মসূচির কথা জানিয়ে দিল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা ডিএ-র দাবিতে যে কোনওভাবেই পিছু হটবেন না, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন সংগঠনের নেতা তাপস চক্রবর্তী। ডিএ-র দাবি নিয়ে আন্দোলন আর কলকাতায় আটকে না রেখে রাজধানীতে পৌঁছনোর পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুরও কানে তুলতে চায় যৌথ মঞ্চ।
সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ভাস্কর ঘোষ জানিয়েছেন, আগামী ৩০ মার্চ গণছুটির কর্মসূচি পালন করবেন তাঁরা। ওই দিনই শহিদ মিনারে গণ অবস্থানও করবেন। শিয়ালদহ ও হাওড়া স্টেশন থেকে সরকারি কর্মচারীদের মিছিল এসে যোগ দেবে শহিদ মিনারে। মিছিলের পর সেখানেই একটি সমাবেশ করা হবে।
পাশাপাশি, ২৬ মার্চ সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সদস্যরা রাষ্ট্রপতিকে ইমেল করে নিজেদের দাবির কথা জানাবেন। ২৭ মার্চ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইমেল করে ডিএ-র দাবি জানাবেন। ১১-১২ এপ্রিল যন্তরমন্তরে গিয়ে ডিএ-র দাবিতে ধর্না দেবেন। কারণ প্রসঙ্গে জানানো হয়েছে, যে হেতু ডিএ মামলার শুনানি পিছিয়ে ১১ এপ্রিল হয়ে গিয়েছে, তাই ওই দিন দিল্লিতে উপস্থিত থাকতে চাইছেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সদস্যরা। সংগঠনের তরফে চেষ্টা করা হচ্ছে ওই দিন যাতে সংগঠনের সদস্যরা বেশি সংখ্যায় দিল্লিতে উপস্থিত থাকতে পারেন। ওই সময়েই রাষ্ট্রপতির পাশাপাশি, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন ও শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের সঙ্গে দেখা করে নিজেদের দাবি তুলে ধরতে চায় সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ।
ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান থাকলেও, কো-অর্ডিনেশন কমিটি এই কর্মসূচিতে শামিল হবে কি না, সে নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। কিন্তু ৩০ মার্চ গণছুটির বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার আবার ব্যবস্থা নিতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, ফেব্রুয়ারি মাসের ২০-২১ তারিখে কর্মবিরতি পালন করেছিল সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলি। সেই সময় বিজ্ঞপ্তি জারি করে কড়া পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছিল নবান্ন। ১০ মার্চ প্রশাসনিক ধর্মঘটের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছিল। তাই ৩০ মার্চ সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের গণছুটি ঘোষণার দিনেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলেই মনে করছেন সরকারি কর্মচারীদের একাংশ।
কারণ গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে ৩ শতাংশ ডিএ-র ঘোষণা করে দিয়েছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। পরে বিধানসভাতেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, এর বেশি ডিএ দেওয়া তাঁর সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। মুখ্যমন্ত্রী এমন ঘোষণার পরেই নবান্ন বিজ্ঞপ্তি জারি করে মার্চ মাস থেকেই ডিএ দেওয়ার কথা ঘোষণা করে দিয়েছে। কিন্তু ৩ শতাংশ ডিএ-তে খুশি নন সরকারি কর্মচারীরা। তাঁরা বাকি ৩৩ শতাংশ ডিএ-র দাবিতে সরব হয়েছেন।