হাঁটুর ব্যথায় আরাম দেয় উৎকটাসন। চিত্রাঙ্কন: শৌভিক দেবনাথ।
অতিরিক্ত হাঁটাচলা কিংবা দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার ফলে হাঁটুর উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে হাঁটু দুর্বল হয়। মালাইচাকি ক্ষয়ে যেতে শুরু করে। অস্থিসন্ধির আশপাশে যে ফ্লুইড থাকে, তা-ও বয়সকালে শুকিয়ে যায়। ফলে স্বাভাবিক ছন্দে হাঁটাচলা করতেও অসুবিধা হয়।
চিকিৎসকেরা অনেক সময়ে হাঁটু প্রতিস্থাপন করার পরামর্শও দেন। তবে সে সব অত্যন্ত জটিল এবং কষ্টকর প্রক্রিয়া। এই ধরনের অস্ত্রোপচার খরচসাপেক্ষও বটে। তবে যোগ প্রশিক্ষকেরা বলছেন, সময় থাকতে যদি নিয়মিত উৎকটাসন অভ্যাস করা যায়, তা হলে হাঁটুর সমস্যা কিছুটা হলেও রুখে দেওয়া যায়। নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে, উৎকটাসন বেশ কষ্টকর। ইংরেজিতে এই আসনকে ‘চেয়ার পোজ়’ও বলা হয়। তবে এই আসন করতে কোনও চেয়ারের প্রয়োজন পড়ে না। অদৃশ্য চেয়ারে বসার মতো ভঙ্গি রপ্ত করতে হয়।
কী ভাবে করবেন?
· দুই পায়ের মধ্যে সামান্য ব্যবধান রেখে প্রথমে ম্যাটের উপর টান টান হয়ে দাঁড়ান। দুই হাত থাকুক দেহের দু’পাশে।
· এ বার দুই হাত দুই কানের পাশ দিয়ে মাথার উপর তুলুন। খেয়াল রাখবেন, কনুই যেন ভাঁজ না হয়। হাতের তালু প্রণামের ভঙ্গিতে রাখবেন।
· এর পর হাঁটু ভাঁজ করে কোমর থেকে পিঠ সামনের দিকে সামান্য প্রসারিত করুন। হাতের অবস্থান কিন্তু একই রকম থাকবে।
· মনে মনে কল্পনা করুন, যেন চেয়ারে বসছেন। সেই অদৃশ্য চেয়ারে বসতে গেলে শরীরের ভঙ্গি যেমনটা হওয়া উচিত, তেমনটাই হবে। শ্বাস-প্রশ্বাস থাকবে স্বাভাবিক।
· এই অবস্থানে থাকতে হবে অন্তত ৩০ সেকেন্ড। অভ্যাস হয়ে গেলে ধীরে ধীরে সময় বৃদ্ধি করা যেতে পারে। মোট ৫ সেট করে এই ব্যায়াম অভ্যাস করতে হবে।
কেন করবেন?
এই ব্যায়াম নিয়মিত অভ্যাস করলে মেরুদণ্ডের নমনীয়তা বজায় থাকে। পা, কোমর, পিঠ এবং নিতম্বের পেশি মজবুত হয়। ঊরুর মেদ নিয়ে যাঁরা চিন্তায় রয়েছেন, তাঁদের জন্যও এই আসন উপকারী। দেহের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করে উৎকটাসন।
সতর্কতা
হাঁটুর ব্যথা অনেক পুরনো বা ক্রনিক হলে এই আসন করবেন না। আর্থ্রাইটিস থাকলে, লিগামেন্ট, গোড়ালিতে কোনও চোট-আঘাত লাগলে এই আসন করা নিষেধ। ঋতু চলাকালীন এই ধরনের ব্যায়াম করতে গেলে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া প্রয়োজন।