ধর্ণা শেষে এনআরসি-বিরোধী যৌথ মঞ্চের ডাকে মিছিল। আছেন বলিউড অভিনেতা জিশান আয়ুব খান। ডান দিকে, চ্যাপলিন স্কোয়ারে ধর্নায় বক্তব্য রাখছেন জিশান আয়ুব খান।—নিজস্ব চিত্র।
ধর্না-অবস্থান চলছিল গত ২১ জানুয়ারি থেকে। কলকাতা পুরসভার কাছে চ্যাপলিন স্কোয়ারে টানা ৯ রাতের অবস্থানের পরে এনআরসি-বিরোধী যুক্ত মঞ্চের ডাকে বিভিন্ন গণ-সংগঠনের মিছিলে বৃহস্পতিবার ভিড় হল বিপুল। কোনও প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের সরাসরি সংযোগ ছাড়াই এ দিনের মিছিল সিএএ এবং এনআরসি-র বিরুদ্ধে ক্ষোভের সূচক বলেই রাজনৈতিক শিবিরের মত।
কলকাতা পুরসভার সামনে থেকে শুরু হয়ে এস এন ব্যানার্জি রোড এবং জওহরলাল নেহরু রোড হয়ে মেয়ো রোডের গাঁধী মূর্তিতে গিয়ে শেষ হয় মিছিল। যুক্ত মঞ্চের আহ্বায়ক প্রসেনজিৎ বসু, প্রদেশ যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হবিবুর রহমানদের পাশাপাশিই মিছিলে ছিলেন বলিউড অভিনেতা মহম্মদ জিশান আয়ুব খান। সংবিধান রক্ষার দাবিতে এবং ধর্মের ভিত্তিতে মানুষকে ভাগ করার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে চ্যাপলিন স্কোয়ারে বক্তৃতাও করেন আয়ুব। মিছিল শেষে প্রসেনজিৎ বলেন, ‘‘বিপদটা কোথায়, গ্রামে গ্রামে গরিব মানুষকে তা বুঝিয়ে বলতে হবে। এ বার যা মিছিল হল, তার চেয়ে আরও অনেক বেশি মানুষকে নিয়ে ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে আমরা মিছিল করব। সরকার সিএএ, এনআরসি এবং এনপিআর প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। সরকারকে মাথা নিচু করতে আমরা বাধ্য করব!’’ গোটা অবস্থান এবং এ দিনের মিছিলেও মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। এই সব প্রতিবাদকেই ‘জনজাগরণে’র সঙ্গে তুলনা করে সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন দীপঙ্কর ভট্টাচার্য ইতিমধ্যে আহ্বান জানিয়েছেন, হিন্দু গণভিত্তির দিকেও বামেদের নজর দিতে হবে। সিএএ-বিরোধী প্রতিবাদে বিপুল সংখ্যায় মুসলিমেরা আসছেন। আর সঙ্ঘ-বিজেপি হিন্দু এবং অ-মুসলিমদের বোঝানোর চেষ্টা করছে, তাঁদের কোনও বিপদ নেই। এই ‘ভুল প্রচারে’র মোকাবিলায় বামেদের নজর দিতে হবে বলেই দীপঙ্করবাবুদের মত।