তৃণমূল সাংসদ অভিষেককে লেখা চাকরিপ্রার্থীদের সেই চিঠি জমা পড়ল হাই কোর্টে। — গ্রাফিক্স শৌভিক দেবনাথ।
তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নাম করে কয়েক কোটি টাকা নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন নদিয়ার অনেকে। চাকরি না পেয়ে সেই টাকা ফেরত চাইলেও বিধায়ক দেননি বলে অভিযোগ। তেহট্ট, পলাশিপাড়া ও করিমপুর বিধানসভা এলাকার অনেকেই তাপসের নামে থানায় অভিযোগ করার পাশাপাশি গোটা বিষয়টি জানিয়ে চিঠি পাঠান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সেই চিঠি এ বার জমা পড়ল কলকাতা হাই কোর্টে। শুক্রবার প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানির সময় ওই চিঠি জমা দেন মামলাকারীদের আইনজীবী।
শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টে প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি ছিল। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে ওই চিঠি জমা করেন মামলাকারীদের তরফে আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত। আদালতে জমা পড়া চিঠিটি লেখা হয়েছে অভিষেককে। লিখেছেন ১৬ জন চাকরিপ্রার্থী। চিঠির ছত্রে ছত্রে তাপসের নামে অভিযোগ। চিঠিতে রয়েছে ১৬ জনের নাম। তাঁদের কার থেকে কত টাকা নেওয়া হয়েছিল, তা-ও লেখা হয়েছে সেখানে। এক এক জন চাকরিপ্রার্থীর থেকে ৫০ হাজার থেকে আট লক্ষ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। চিঠি পাওয়ার পর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় যদিও তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী সোমবার, ২৫ জুলাই।
গত বিধানসভা নির্বাচনে তাপস তৃণমূলের হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন তেহট্ট থেকে। তিনি সেখান থেকে জয়ী হন। তার আগে তিনি ছিলেন নদিয়ারই পলাশিপাড়ার বিধায়ক। সম্প্রতি তাপসের বিরুদ্ধে তাঁর বিধানসভা এলাকার অনেকেই অভিযোগ তোলেন, বিধায়ক চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রচুর টাকা নিয়েছেন অনেকের কাছ থেকে। শুধু তাপস নন, তাঁর আপ্তসহায়ক প্রবীর কয়ালের বিরুদ্ধেও অভিযোগ ওঠে। টাকা দেওয়ার পর চাকরি না হওয়ায় তাঁরা বিধায়কের কাছে সেই টাকা ফেরত চেয়েও পাননি বলে অভিযোগ। এর পরেই পুলিশের পাশাপাশি অভিযোগপত্র পাঠানো হয় দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে।
তাপস যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ সেই সময় অস্বীকার করেন। এমনকি, প্রবীর যে তাঁর আপ্তসহায়ক নন, তা-ও দাবি করেন। তাপস যখন এই সব দাবি করছেন, তার কয়েক দিনের মধ্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘি থেকে প্রবীর-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করে। তাপসকেও ডেকে পাঠায় রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা।
সেই তাপসের বিরুদ্ধে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে পাঠানো অভিযোগপত্র এ বার আদালতেও জমা পড়ল।