প্রার্থীদের প্রশ্ন, নিয়োগ না-হলে শূন্য পদের সংখ্যা তো বাড়তে থাকার কথা। কমছে কী ভাবে? প্রতীকী ছবি।
হবু স্কুলশিক্ষকদের অনশনে প্রার্থীদের অভিযোগ ছিল, শূন্য পদ ‘আপডেট’ বা হালতামামি হচ্ছে না। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের জন্য তৃতীয় দফার কাউন্সেলিংয়ের আগে ওই স্তরের প্রার্থীদের অভিযোগ, শূন্য পদ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষকপদ প্রার্থীদের অভিযোগ, এই দফার কাউন্সেলিংয়ের আগে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) তাদের ঘোষিত তালিকায় জানিয়েছিল, মোট শূন্য পদ ৮২২টি। কিন্তু কাউন্সেলিং শুরুর ঠিক আগে তারা দেখাচ্ছে, ৪৯৩টি পদ খালি। প্রার্থীদের প্রশ্ন, ৩২৯টি শূন্য পদ হঠাৎ কমে গেল কী ভাবে? এই নিয়ে তাঁরা বিকাশ ভবনে স্মারকলিপি দেন। কিন্তু জবাব মেলেনি। সমস্যার কোনও সুরাহা হয়নি। প্রার্থীরা জানিয়ে দিয়েছেন, এর সদুত্তর না-পেলে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন।
শিবব্রত ভট্টাচার্য নামে পশ্চিম মেদিনীপুরের এক যুবক ভূগোলের শিক্ষকপদ-প্রার্থী জানান, ওয়েটিং লিস্টে তাঁর নাম ছিল ২৩ নম্বরে। কিন্তু শূন্য পদ কমিয়ে দেওয়ায় তিনি ডাক পাননি। শিবব্রতবাবু বলেন, ‘‘শূন্য পদ কমে যাওয়ায় কাউন্সেলিংয়ে ডাক পেলাম না। কেন পদ কমল, তার সদুত্তর না-পেলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যাবো।’’ প্রার্থীদের প্রশ্ন, নিয়োগ না-হলে শূন্য পদের সংখ্যা তো বাড়তে থাকার কথা। কমছে কী ভাবে? প্রথম ও দ্বিতীয় দফার কাউন্সেলিংয়ের পরে বেশ কিছু শিক্ষক স্কুলে যোগ দেননি। সেই পদগুলো যোগ হলে খালি পদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কথা। তা কমল কেন? অনামিকা চাকী নামে সিউড়ির এক প্রার্থী জানান, তৃতীয় দফার কাউন্সেলিংয়ে ৩২৯টি শূন্য পদ কমে যাওয়ায় তিনিও সুযোগ পাননি। ‘‘আমার বিষয়ে ২৩টি পদ শূন্য ছিল। কিন্তু তৃতীয় কাউন্সেলিংয়ে ডাক আসেনি। কবে ফের কাউন্সেলিং হবে, হলেও আমরা সুযোগ পাব কি না, ধোঁয়াশায় আছি,’’ বললেন অনামিকা।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এসএসসি-র চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার অবশ্য বলেন, ‘‘প্রথম বা দ্বিতীয় দফার কাউন্সেলিংয়ের পরে এমন স্কুলে কয়েক জনের নিয়োগ হয়েছিল, যেখানে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষক রয়েছেন। তাই ওই প্রার্থীদের ফের অন্য স্কুলে নিয়োগ করতে হয়েছে। সেই জন্যই কিছু শূন্য পদ কমে গিয়েছে। তবে শূন্য পদ পূরণ করতে পরপর কাউন্সেলিং করছি।’’
সৌমিত্রবাবুর এই বক্তব্যে প্রার্থীরা আশ্বস্ত হতে পারছেন না। তাঁদের প্রশ্ন, যে-সব স্কুলে পদ খালি আছে, সেখানেই তো প্রার্থী পাঠানোর কথা। ঠিকমতো না-দেখে প্রার্থীদের কেন এমন স্কুলে পাঠানো হচ্ছে, যেখানে পদ শূন্য নেই? এই ভুল তো স্কুল সার্ভিস কমিশনের। তার খেসারত প্রার্থীদের দিতে হবে কেন? শূন্য পদের সংখ্যা কমে যাওয়ায় সরব হয়েছে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনও। মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অনিমেষ হালদার বলেন, ‘‘এসএসসি-র প্রতিটি ধাপে অনিয়ম ও দুর্নীতি হচ্ছে। অভাব রয়েছে স্বচ্ছতারও। এর ফলে শিক্ষক নিয়োগের কাজটাও ঠিকমতো হচ্ছে না। আখেরে সার্বিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্কুলের পঠনপাঠনই।’’