লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের দিন, মঙ্গলবার ধর্না মঞ্চ ছিল শুনশান। গান্ধী মূর্তির পাদদেশে সেই মঞ্চে বুধবার হাজির হলেন হাতে-গোনা ১২-১৩ জন। সাধারণত সকাল দশটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মঞ্চে থাকলেও এ দিন দুপুর দু’টোর মধ্যেই বাড়িমুখো হয়েছেন তাঁরা।
মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে বসে থাকা বিভিন্ন মঞ্চের চাকরিপ্রার্থীদের সংখ্যাও ক্রমশ কমে আসছে। বুধবার টেট-পাস প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থীদের মঞ্চে তিন জন, স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি মঞ্চে ১০ জন, রাজ্য গ্রুপ-ডি মঞ্চে ১৬ জন আর আপার প্রাইমারির মঞ্চে ছিলেন ১২ জন চাকরিপ্রার্থী।
কিছুদিন আগেও প্রতিটি মঞ্চেই চাকরিপ্রার্থীদের সংখ্যা ২৫-৩০ এর কম হতো না। সেখানে আস্তে আস্তে এই সংখ্যাটা কেন কমছে? তবে কি উৎসাহ হারাচ্ছেন তাঁরা?
গান্ধী মূর্তি পাদদেশে বসা নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থী অভিষেক সেনের দাবি, “১১৭৫ দিন অতিক্রান্ত। উৎসাহ হারানোর প্রশ্নই ওঠে না। এখন নিয়োগের বিষয়টা অনেকটাই সুপ্রিম কোর্টের উপরে নির্ভরশীল। তাই বেশিরভাগ চাকরিপ্রার্থী তাকিয়ে আছেন ১৬ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের শুনানির দিকে। আমাদের দাবি, যোগ্য ও অযোগ্য মধ্যে বিভাজন করে এসএসসি যেন ১৬ জুলাইয়ের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে তালিকা জমা দেয়। অযোগ্যরা যোগ্যদের তালিকায় ঢুকে আছেন বলেই আমরা, যোগ্য প্রার্থীরা রাস্তায় বসে আছি।”
অন্য দিকে, উচ্চ মাধ্যমিক চাকরিপ্রার্থীরা তাকিয়ে আছেন কলকাতা হাই কোর্টের দিকে। মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশের মঞ্চে থাকা উচ্চ প্রাথমিক চাকরিপ্রার্থী সুশান্ত ঘোষের কথায়, “আন্দোলনের উৎসাহ হারাইনি। চাকরিপ্রার্থীদের অনেকেই বিভিন্ন জেলা শহরে বা গ্রামে থাকে। ধর্না মঞ্চে মাঝে মাঝে আসছেন। হাই কোর্টের দিকে তাকিয়ে থাকলেও আমরা মনে করি রাজ্য সরকার যদি উদ্যোগী হয় তবেই দ্রুত শুনানি হবে।” সুশান্ত জানান, ২৯ মার্চের পরে ২১ মে শুনানি হল। পরবর্তী শুনানির তারিখ পড়েছে ২৮ জুন। তাঁর দাবি, এত দেরি করে শুনানি হলে উৎসাহ তো কমবেই।
উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরা জানিয়েছেন, তাঁদের ৮৯০০ জনের প্রথম কাউন্সেলিং হয়ে গিয়েছে। কোন স্কুলে যোগ দেবেন, তার নামও পেয়ে গিয়েছেন। কিন্তু এখনও আদালতের নির্দেশে সুপারিশপত্র পাননি। চাকরিপ্রার্থীদের মতে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পারেন তাদের সমস্যা সমাধান করতে। তাই তাঁর হস্তক্ষেপের দাবিতে ফের রাস্তায় নামবেন তাঁরা।