রাজ্যে সক্রিয় দুই জেএমবি-ই: কেন্দ্র

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের মতে, পশ্চিমবঙ্গ আদি জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর মূল ঘাঁটি ছিল বরবারই। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ সন্ত্রাস দমনে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ায় সেখানকার নব্য জেএমবি জঙ্গিরা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পশ্চিমবঙ্গে চলে আসছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৯ ০১:৫৯
Share:

পশ্চিমবঙ্গে মাদ্রাসাগুলির সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ নতুন নয়। অতীতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন রাজ্যের বেশ কিছু মাদ্রাসা সন্ত্রাসের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে তিনি মেনে নিয়েছিলেন। এখন আবার সেই অভিযোগ উঠছে। কিন্তু কেন?

Advertisement

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের মতে, পশ্চিমবঙ্গ আদি জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর মূল ঘাঁটি ছিল বরবারই। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ সন্ত্রাস দমনে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ায় সেখানকার নব্য জেএমবি জঙ্গিরা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পশ্চিমবঙ্গে চলে আসছে। এ ব্যাপারে একাধিক বার রাজ্য সরকারকে সতর্ক করেছে কেন্দ্র। জেএমবির দু’টি সংগঠনই এখন পশ্চিমবঙ্গে সক্রিয় রয়েছে বলেই মত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিশণ রেড্ডি আজ লোকসভায় এ নিয়েই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

এ নিয়ে তৃণমূলের তরফে দিল্লিতে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি কলকাতায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। পার্থবাবুর বক্তব্য, বিষয়টির সাধারণীকরণ ও মাদ্রাসাগুলিকে নিশানা করাটা ঠিক নয়। কিছু খারাপ লোক যদি থাকে, তবে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে। তবে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলটি বিশেষ একটি সম্প্রদায়ের প্রতি অন্যায্য আচরণের জন্য পরিচিত।’’

Advertisement

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক অবশ্য জানাচ্ছে, ভারতে সন্ত্রাস ছড়ানোর অভিযোগ থাকায় গত মে মাসেই জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ, জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়া বা জামাতুল মুজাহিদিন হিন্দুস্থান-কে ইউএপিএ আইনে ভারতে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশে চাপে পড়ায় পশ্চিমবঙ্গকে ঘাঁটি করে এখন অসম ও ত্রিপুরার মতো সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে নিজেদের নেটওয়ার্ক বানানোর কাজে হাত দিয়েছে জঙ্গিরা। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জেলাগুলির পাল্টে যাওয়া জনবিন্যাসকে কাজে লাগিয়ে চলছে সদস্য সংগ্রহের কাজও। যে কাজে ব্যবহার
করা হচ্ছে মাদ্রাসাগুলিকে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘খাগড়াগড়ের স্মৃতি এখনও টাটকা। তার পর থেকেই গোয়েন্দাবাহিনীর নজরদারিতে রয়েছে সীমান্ত এলাকার মাদ্রাসাগুলি।’’

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বলছে, গত এক দশকে সীমান্ত এলাকাগুলিতে ছাতার মতোই গজিয়ে উঠেছে অনুমোদনহীন একাধিক মাদ্রাসা। সেখানে কিশোর ও যুবকদের জেহাদের মন্ত্রে দীক্ষিত করার কাজ চালু রয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানগুলি চালানোর জন্য টাকা আসছে বিদেশ থেকে। দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় বসবাস শুরু করেছে রোহিঙ্গারা। তাদের ভারতে ঢোকার পিছনেও সক্রিয় রয়েছে ওই জঙ্গি সংগঠনের একাংশ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বক্তব্য, সতর্ক করে দেওয়ার পরে রাজ্য সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে সে সম্পর্কে কেন্দ্র সম্পূর্ণ অন্ধকারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement